বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (BCB) ২০২৫–২৬ সালের জাতীয় ক্রিকেট লিগ (NCL) টুয়েন্টি টুর্নামেন্টের সততা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১৪ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টে অ্যান্টি-করাপশন ব্যবস্থাকে জোরদার করা হবে, যাতে প্রতিযোগিতা স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গতভাবে সম্পন্ন হয়।
BCB মিডিয়া কমিটি চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান দৈনিক সানকে জানান, বোর্ড যে কোনো অনিয়ম রোধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা নিরাপত্তা এবং সততা বজায় রাখার জন্য কোনো ছাড় দেব না। এলেক্স মার্শাল ১৮ সেপ্টেম্বর আসছেন এবং তিনি ACU কমিটিকে কার্যকরভাবে পরিচালনার পরামর্শ দেবেন। আমাদের NCL টুয়েন্টির জন্যও পরিকল্পনা আছে।”
বোর্ড টুর্নামেন্ট জুড়ে অ্যান্টি-করাপশন তদারকি শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আরও অ্যান্টি-করাপশন কর্মকর্তাকে উপস্থিত করার বিষয়টি আলোচনা চলছে। প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে খেলোয়াড়, দলের কর্মকর্তারা এবং সহায়ক স্টাফদের বোর্ডের শূন্য-সহনশীলতার নীতি স্মরণ করানো হবে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দলীয় ক্যাপ্টেনদের ঘোষণা শেষ মুহূর্তে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বোর্ড কর্মকর্তা জানান, এটি পুরো সমাধান না হলেও একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে খেলোয়াড় বা বাহ্যিক পক্ষের প্রভাব সীমিত করার চেষ্টা করা হবে।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী বরিশাল দলের কিছু খেলোয়াড় নকলভাবে তাদের হেড কোচ নিয়োগে প্রভাব ফেলতে চেয়েছিলেন। এই অভিযোগে BCB দ্রুত সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলকে বরিশাল দলের প্রধান কোচ নিয়োগ করেছে। বোর্ড কর্মকর্তা বলেন, এটি টুর্নামেন্টের সেরা প্রস্তুতি নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী দলের স্কোয়াডও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে যে কিছু খেলোয়াড় রাজনৈতিক সংযোগ ব্যবহার করে ৩০ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াডে স্থান পেতে চাচ্ছেন, যাতে তারা টুয়েন্টি খেলতে পারেন কিন্তু চারদিনের লাল বল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন না।
জাতীয় তারকা মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তও এই পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কিছু খেলোয়াড়ের বক্তব্য, “টুয়েন্টির জন্য ভালো পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তা শোনা হয়নি। আমাদের নিয়মিত খেলোয়াড়রা সুযোগ পাচ্ছেন কি না, তা এখন অজানা।”
২০২৫–২৬ সালের ঘরোয়া ক্যালেন্ডার এনসিএল টুয়েন্টি দিয়ে শুরু হবে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপর ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চারদিনের NCL অনুষ্ঠিত হবে। বোর্ড কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই পদক্ষেপ প্রতিযোগিতা মেধাভিত্তিক ও বিতর্কমুক্ত রাখবে, যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।