দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে ২৭তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার ১১৩৭ জন প্রার্থী সরকারি ক্যাডার পদে নিয়োগ পাবেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের landmark রায় গত সোমবার প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই প্রার্থীদের নিয়োগ কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ১৯ পৃষ্ঠার রায়ে হাইকোর্টের আগের রায় অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার আদেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে যারা ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় নির্বাচিত হলেও নিয়োগ পাননি, তারা সবার আগে সরকারের পদে বসবেন এবং ২৭তম ব্যাচের যথোপযুক্ত সিনিয়রিটি পাবেন।
২৭তম বিসিএসের প্রার্থী আবদুল হায় আল-হাদী জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছিল এবং আপিল বিভাগ সেই রায় বহাল রেখেছে, তাই এখন থেকে তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ কার্যকর হবে।
২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির একটি বেঞ্চ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রফাত আহমেদের নেতৃত্বে এই রায় দেন।
২০০৭ সালে ফখরুদ্দিন আহমেদ পরিচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসের ভিভা পরীক্ষা বাতিল করে দ্বিতীয় দফা ভিভার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীরা দ্বিতীয় দফার ভিভার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন।
২০০৮ সালে হাইকোর্ট প্রথম ভিভার ফলাফল বৈধ ঘোষণা করেন, কিন্তু ২০০৯ সালে অন্য একটি বেঞ্চ দ্বিতীয় দফার ভিভাকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এরপর নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীরা আপিল বিভাগে বিভিন্ন রিট আবেদন করেন এবং সরকারও কয়েকটি আবেদন করে। ২০১০ সালে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের প্রথম রায় বহাল রেখে দ্বিতীয় ভিভার ফলাফল বাতিলের পক্ষে রায় দেন।
পরে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে পুনঃবিচারের আবেদন করা হয় এবং গত বছর নিয়োগ বঞ্চিত ১১৩৭ প্রার্থী ও ১৪০ জন আবেদনকারী পুনঃবিচারের আবেদন করেন।
এই আপিলের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ পুনরায় শুনানি করে এখনকার রায় দেন, যা নিয়োগ কার্যকর করার পথ সুগম করবে।
এই রায়ের ফলে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করা প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে যোগদানের সুযোগ মিলবে এবং ২৭তম বিসিএস ব্যাচের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।