বাংলাদেশের চিফ অ্যাডভাইজার প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের মালয়েশিয়া সফরের সময় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার উচ্চ কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠকে “অবৈধ বা অনিয়মিত” প্রবাসী কর্মীদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়েছে।
চিফ অ্যাডভাইজারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম মঙ্গলবার রাতে কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ মাইগ্রেশনের সমস্যা সমাধানের জন্য মালয়েশিয়ার সঙ্গে নিয়মিত এবং আন্তরিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়া এই বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং প্রবাসী কল্যাণে সচেতন রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে গভীর আলোচনা করেছে। বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সচিব সুফি আবদুল্লাহিল মারুফ, প্রেস সচিব ফয়েজ আহমদ ও সহকারী সচিব সুষমিতা তিথিও উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল আলম বলেন, দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত সমস্যা থাকলেও মাইগ্রেশন সংক্রান্ত সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ চলছে। বাংলাদেশ মানবপাচারের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছে।
প্রফেসর ইউনুস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যে বৈঠক “অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ” হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (FTA) নিয়ে আলোচনা শিগগিরই শুরু হবে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে শফিকুল আলম জানান।
তিন দিনের সরকারি সফরে আসা প্রফেসর ইউনুস মালয়েশিয়ার কাছে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীদের জন্য দরজা খোলা রাখার আহ্বান জানান।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে। দুই দেশের উন্নয়নে প্রবাসী কর্মীদের ভূমিকা অপরিহার্য।
প্রফেসর ইউনুস বলেন, “বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে দেশে ফিরে ব্যবসা গড়ে তুলছে এবং অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করছে। আমরা মালয়েশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ।”
তিনি আরও বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি প্রবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। প্রবাসীরা পাঠানো রেমিট্যান্স তাদের পরিবার, শিক্ষাব্যবস্থা ও জীবনমান উন্নত করছে।
চিফ অ্যাডভাইজার বলেন, “শুধুমাত্র বিদেশ থেকে শ্রমিক আসা নয়, তারা এখানে কাজ করে খুশি এবং তাদের অবদান দুই দেশের জন্য লাভজনক।”
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার মাইগ্রেশন, বাণিজ্য ও সামাজিক সহযোগিতায় এই উন্নত আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।