প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৫, ৭:৫১ এএম; আপডেট: ২৪ মে ২০২৫, ৭:৫৪ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সিএনজি অটোরিকশাচালক মুফাজ্জল। মুমূর্ষু এক রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে গিয়ে সংঘর্ষে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
গত ১৯ মে রাতের এই দুর্ঘটনাটি ঘটে বারহাট্টার বিকালিকা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিজের সিএনজিতে গ্যাস নিতে বের হয়েছিলেন মুফাজ্জল। পথিমধ্যে এক গুরুতর অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি মানবিকতার পরিচয় দিয়ে রাজি হন।
রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় একটি পিকআপ, অন্য একটি সিএনজি ও মুফাজ্জলের সিএনজির মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মুফাজ্জল। তবে সেই রোগী এখনো বেঁচে আছেন চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মুফাজ্জল স্ত্রী, এক কন্যা (আড়াই বছর) এবং এক পুত্র (প্রায় ১২ বছর) রেখে গেছেন। তিনি সেদিন বাড়ি ফেরার সময় মেয়ের জন্য আম ও লিচু আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বের হয়েছিলেন।
মুফাজ্জলের স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার কোনো ভরসা নেই। স্বামীটাই ছিল সব। এখন এই দুটি সন্তান নিয়ে আমি কীভাবে চলব।”
সড়ক দুর্ঘটনায় আরও অন্তত আটজন আহত হয়ে বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
- চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে উল্লাপাড়ায় হকার শিশুর মৃত্যু
- সাভারের সিএনজি স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত ৪
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খবিরুল আহসান জানান, “আমরা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। বিধবা ভাতা ও অন্যান্য সরকারি সুবিধা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। সড়ক দুর্ঘটনার অনুদানের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুফাজ্জলের মৃত্যু শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, এলাকাবাসীর মাঝেও গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। প্রতিবেশীরা জানান, তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও সৎ মানুষ। তাঁর আত্মত্যাগের ঘটনা সবাইকে মর্মাহত করেছে।
এখন মুফাজ্জলের পরিবারের একমাত্র ভরসা সরকারি সহায়তা ও সমাজের সহমর্মিতা। স্থানীয়রা প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।