Tuesday, August 12, 2025
Homeজাতীয়বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে সরকারি বাজেট বৃদ্ধির দাবি

বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে সরকারি বাজেট বৃদ্ধির দাবি

সাজিদা ফাউন্ডেশনের রাউন্ডটেবিলে মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগ ও সাধারণ চিকিৎসার সঙ্গে সংহতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ

বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায় সরকারি তহবিল বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়ন নেতারা। ঢাকায় সোমবার সাজিদা ফাউন্ডেশন আয়োজিত “ট্রমা এবং আরোগ্য: সম্মিলিত পথ” শীর্ষক রাউন্ডটেবিলে তারা মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে সাধারণ স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে একীভূত করার পাশাপাশি সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, দেশে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের প্রায় ৯২ শতাংশই চিকিৎসা নিচ্ছেন না। সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের উপর জরিপে দেখা গেছে, ২৮ শতাংশ মানুষ ডিপ্রেশনে ভুগছেন, ২০ শতাংশ রাগগ্রস্ত, ১৬ শতাংশ উদ্বিগ্ন, ১৬ শতাংশ ভীত এবং ১৫ শতাংশ পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য উদ্ধৃত করে ডঃ ইশাকুল কবির, WHO বাংলাদেশে এনসিডি ও মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম ম্যানেজার, বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যে ৫০৪ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের মাধ্যমে ১০ বছরে ৫.৩৩ বিলিয়ন ডলারের লাভ আসতে পারে। তিনি বলেন, “মানসিক স্বাস্থ্য বিনিয়োগ শুধুমাত্র নৈতিক দায়বদ্ধতা নয়, এটি অর্থনৈতিক প্রয়োজন।”

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন ইনস্টিটিউট (NITOR) এর উপ-পরিচালক এসকে মুহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রধান হাসপাতালে মানসিক রোগ বিভাগের প্রয়োজনীয়তা ও বাজেট বৃদ্ধির দাবি তোলেন।

সাজিদা ফাউন্ডেশনের সিইও জাহিদা ফিজ্জা কবির সুলভ ও মানসম্মত সেবার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে হবে এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় মানসিক স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের (DGHS) ডঃ এস এম মাহমুদুর রশীদ দেশের মাত্র দুটি বিশেষায়িত মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতাল থাকার কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ যোগ্য জনবল ও কঠোর নৈতিক ও সেবামূলক মানদণ্ডের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসিরউল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিটের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ সরকারের কাছে কমিউনিটি ভিত্তিক হস্তক্ষেপ, প্যারাপ্রফেশনাল প্রশিক্ষণ এবং জরুরি মানসিক স্বাস্থ্য সেবার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান।

ইনোভেশন ফর ওয়েলবিইং ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মোনিরা রহমান কার্যকর জনবেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সামগ্রিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

অন্যান্য আলোচকরা ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সৈয়দ মোঃ নুরুদ্দিন, মাইক্রো ফাইন্যান্স রেগুলেটরি অথরিটির মতিয়ার রহমান, আইসিডিডিআর,বি’র ডঃ মোহাম্মদ সোহেল শোমিক এবং সাজিদা ফাউন্ডেশনের মোঃ ফজলুল হক।

রাউন্ডটেবিলের শেষাংশে সাজিদা ফাউন্ডেশনের জেনারেল ম্যানেজার ফারজানা শরমিন জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন।

RELATED NEWS

Latest News