প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৫, ৬:৫১ এএম
আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের জানিয়েছেন, পুতিন এখনো ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী নন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে তিনটি সূত্র জানায়, পুতিন বিশ্বাস করেন যে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে আছে এবং সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই তিনি শান্তির পথে হাঁটতে চাইছেন না।
এই প্রথমবারের মতো ট্রাম্প সরাসরি ইউরোপীয় নেতাদের এ ধরনের বার্তা দিলেন, যদিও আগে তিনি জনসম্মুখে বারবার দাবি করেছেন যে পুতিন শান্তি চান এবং আলোচনায় আগ্রহী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের অবস্থান পুতিনের সঙ্গে আলোচনার আগে ও পরে ছিল ভিন্ন। আলোচনার আগের দিন রোববার তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে পরদিন আলোচনার পর তিনি ভ্যাটিকানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেন এবং পরবর্তী নিষেধাজ্ঞার পথও উন্মুক্ত রাখেন।
সোমবারের আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডেরিক মার্টজ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেইন।
পরে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “এটা আমার যুদ্ধ নয়। যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাতে টেনে আনা হয়েছে, যেখানে আমাদের থাকা উচিত নয়।”
এদিকে, রাশিয়া ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে যে তারা শান্তি আলোচনা ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করছে। মস্কো জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির শর্ত সংবলিত একটি প্রস্তাব তৈরি করছে এবং তা শিগগিরই কিয়েভের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “আমরা আলোচনার সময় বাড়াতে চাই না।”
আরও পড়ুন:
এর মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে সফর করেন। ইউক্রেনীয় বাহিনীর কাছ থেকে পুনর্দখলের পর এটিই ছিল তার প্রথম সফর। সেখানে তিনি একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এদিকে, মস্কোতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার কারণে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়। রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মস্কোর দিকে ছুটে আসা ৩৫টি ড্রোনসহ মোট ১০৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
বিশ্লেষক ম্যাক্সমিলিয়ান হেস বলেন, ট্রাম্প মূলত ইউরোপের নিরাপত্তাকে মার্কিন জাতীয় স্বার্থের কেন্দ্রে দেখেন না, যা অতীতের বেশিরভাগ মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে দেখা গেছে। তবে কংগ্রেসের অনেক রিপাবলিকান নেতার দৃষ্টিভঙ্গি এখনো ইউরোপীয় নিরাপত্তার পক্ষে।
তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প মূলত Schlagzeile বা হেডলাইন জয় পেতে চান, বিস্তারিত নয়। তাই ইউরোপীয় নেতারা এখন সেইভাবেই তার সঙ্গে কাজ করছেন।”
বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক কৌশলে পরিবর্তন আসছে, তবে এর সমাধান যে সহজ নয়, তা আবারও স্পষ্ট হলো ট্রাম্প-পুতিন কথোপকথনের পর।