যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ঝুঁকি কমাতে শুল্ক রেয়াতের হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনছে। এই সিদ্ধান্তটি বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মার্কিন ট্রেড রেপ্রেজেন্টেটিভের (ইউএসটিআরএ) আলোচনার ফলাফল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিবালয় ও বেসরকারি খাতের নেতাদের যৌথ উদ্যোগের ফলস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতারা মার্কিন রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কৌশলগত বৈঠক করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ভারসাম্য বাড়ানোর চেষ্টা করেন।
প্রথমে বাণিজ্য আলোচনা কিছুটা অগ্রগতি না হলেও, পরে উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে জুলাইয়ে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু হয়। এর ফলস্বরূপ, দুই দিনে ২৬৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের সয়াবিন বীজ ও কাপড়ের আমদানি চুক্তি সম্পাদিত হয়।
বিজনেস সূত্র জানায়, একসঙ্গে প্রায় ৪ লাখ টন সয়াবিন বীজ আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে নিজাম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল একাই ৩০০,০০০ টন আমদানির অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের রপ্তানি ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে।
উত্তর আমেরিকার মার্কিন সরবরাহকারীদের সঙ্গে মোস্তফা কামাল বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক দামে সয়াবিনের চুক্তি সম্পন্ন করেছি। এর পাশাপাশি ধান, এলপিজি, গমেরও আমদানি বেড়েছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো বাণিজ্য ঘাটতি কমানো।”
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশ গত বছরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মার্কিন থেকে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যমান পণ্য আমদানি করেছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বা ১.৫ বিলিয়ন ডলার ছিল সয়াবিন, কাপড়, এলপিজি ও ধাতু।
অন্যদিকে, টেক্সটাইল শিল্পের জন্যও বড় অঙ্কের আমদানির চুক্তি হয়েছে। তিনটি বাংলাদেশি কোম্পানি ১৯,০০০ টন কাপড়ের জন্য ৩৮ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে পৌঁছেছেন।
বাংলাদেশি নেতারা বলছেন, মার্কিন থেকে আরও বেশি আমদানির সুযোগ রয়েছে। গত বছর এ ধরনের পণ্যের আমদানি ছিল ৭.৪ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে এখনও মাত্র ২০ শতাংশ আমদানি হয় মার্কিন থেকে।
ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এই চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন হলে এক বছরেই মার্কিন থেকে বাংলাদেশের আমদানির ঘাটতি প্রায় ৭৫ শতাংশ কমে যেতে পারে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সরকারি নীতিগত সহায়তা ও আমদানি প্রক্রিয়ায় সহজতা।