জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এই উদ্যোগকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করে তাকে স্বাগত জানিয়েছে সৌদি আরব।
বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় ম্যাক্রোঁ লেখেন, “মধ্যপ্রাচ্যে একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির প্রতি ফ্রান্সের ঐতিহাসিক অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।”
শুক্রবার সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐকমত্যকে প্রতিফলিত করে। ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকারকে সম্মান জানায়।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আন্তর্জাতিক প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর অব্যাহত প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
এছাড়াও, যারা এখনও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের প্রতি স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।
এএফপি-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪২টি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এই অবস্থান এমন এক সময়ে এলো, যখন ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। সহিংসতায় হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।
ইসরায়েল বর্তমানে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ ঘটানোর অভিযোগের মুখে রয়েছে।
ইসরায়েল সমর্থিত একটি ত্রাণ সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা খাদ্য নেওয়ার জন্য আসা নিরস্ত্র মানুষদের ওপর গুলি চালিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ছয় সপ্তাহে ইসরায়েল নির্ধারিত ত্রাণ বিতরণ স্থানে অন্তত ৮৭৫ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে, যুদ্ধ থামানো ও বন্দি বিনিময়ের জন্য শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচক দল ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, “আমরা এখন বিকল্প পথ খুঁজব যাতে বন্দিদের মুক্ত করা যায় এবং গাজাবাসীর জন্য একটি স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।”
হামাস এই ঘোষণা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করলেও আলোচনায় ফিরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে ফ্রান্সের এ ঘোষণা এবং সৌদি আরবের তাৎক্ষণিক সমর্থন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।