Monday, September 1, 2025
Homeজাতীয়সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের পুর্বাচল প্লট নিয়ে দুর্নীতি তদন্তে দুদক

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের পুর্বাচল প্লট নিয়ে দুর্নীতি তদন্তে দুদক

৬ বছর আগের চেক জমা দিয়ে প্লট বুঝে পাওয়ার অভিযোগ, রাজউক ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও তদন্তের আওতায়

সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে পুর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লট গ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় শুধু খায়রুল হক নন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও তদন্তের আওতায় এসেছেন।

দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইতোমধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসকে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র জমা দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, ২০০৩ সালে খায়রুল হককে পুর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি প্রথম কিস্তির নির্ধারিত ৬.৫ লাখ টাকা পরিশোধ না করায় রাজউক বরাদ্দ বাতিল করে। নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের বরাদ্দ বাতিল হওয়ার পর পুনরায় সেই প্লট পাওয়ার সুযোগ থাকে না।

তবে অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি তার প্রভাবশালী পদ ও রাজনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করে পুনরায় একই প্লট বরাদ্দ নেন। আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, তিনি ওই বরাদ্দের পেমেন্ট বাবদ একটি ছয় বছর পুরনো চেক জমা দেন, যা আদায়যোগ্য ছিল না।

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই চেকটি ‘স্টেইল’ হওয়ায় তা কার্যকর ছিল না। তা সত্ত্বেও রাজউক সেই প্লট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে, এবং তা করা হয় খায়রুল হকের অবসরের পর, ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করার শর্তে। এ ধরনের শর্ত নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এতে সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশের আশঙ্কাও রয়েছে।

এই তদন্ত কেবল একটি ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বৃহত্তর দুর্নীতির উৎস অনুসন্ধানের অংশ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে সরকারি জমি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণের ক্ষেত্রে গৃহায়ন মন্ত্রণালয় ও রাজউকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দুদক বলছে, নথিপত্র যাচাই-বাছাই ও সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করা হবে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সরকারি সম্পদের বরাদ্দে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব কতটা গভীর এবং তা রোধে কার্যকর পদক্ষেপের গুরুত্ব কতটা জরুরি।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • দুদক

RELATED NEWS

Latest News