মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সচিবালয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৯০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬ এবং ১৯ বছর বয়সী দুইজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে সোমবার রাতের দিকে হঠাৎ করে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। আগের দিন উত্তরায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হলেও তা শিক্ষার্থীদের অনেকের অজানা ছিল।
মঙ্গলবার সকালে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে জানতে পারেন পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
পরে শত শত শিক্ষার্থী সচিবালয়ের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং একাধিক যানবাহনে ভাঙচুর চালান।
সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করে।
ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার যেন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তারা অভিযোগ করেন, গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সময় এমন হঠাৎ সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবিচার।
একজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, “রাতের বেলায় পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে আমাদের সঙ্গে উপহাস করা হয়েছে। সকালবেলা কেন্দ্রে গিয়ে শুনি পরীক্ষা নেই। এটা শুধু কষ্ট নয়, অপমান।”
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন কলেজে ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ উপদেষ্টারা, বিমান দুর্ঘটনায় ছাত্রদের ছয় দফা দাবি
অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা আহত হচ্ছি, লাঠিপেটা খাচ্ছি, শুধু একটু স্বচ্ছতা আর দায়িত্বশীলতার দাবিতে।”
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী পরীক্ষার বিষয়ে নতুন করে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
সচিবালয়ে এ ধরনের ঘটনা বিরল হলেও, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও হতাশা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত না হলে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ঘটনার পর সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি পরীক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত আরও আগেভাগে ও স্বচ্ছভাবে জানানো হোক, এমন আহ্বানও জানানো হয়েছে।