বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান জানিয়েছেন, উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিধ্বস্ত হওয়া যুদ্ধবিমানটি পুরনো বা অকার্যকর ছিল না। মঙ্গলবার তিনি রাজধানীর কুর্মিটোলা ঘাঁটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “বিমানটি প্রযুক্তিগতভাবে কিছুটা পুরনো হলেও এটি এখনো কার্যক্ষম ছিল এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ব্যবহৃত হচ্ছিল।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন, বিশেষ করে জনবহুল এলাকায়। কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি রাজধানীর নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
মঙ্গলবার নিহত পাইলটের জানাজায় অংশ নেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“অনেকেই বিমান প্রযুক্তি সম্পর্কে না জেনেই গুজব ছড়াচ্ছেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব ধৈর্য ধরতে এবং অনলাইনে বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়াতে,” বলেন তিনি।
এয়ার চিফ মার্শাল জানান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান সংগ্রহের উদ্যোগ নিচ্ছে, তবে দুর্ঘটনা যেকোনো বিমানেই ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, “দুর্ঘটনার সঙ্গে বিমানের বয়স নয়, বরং এর রক্ষণাবেক্ষণই মুখ্য বিষয়। আমরা আমাদের সব বিমানেই নিয়মিত এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করে থাকি।”
কুর্মিটোলার ঘাঁটি সরানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “১৯৮৫ সালে ঘাঁটি স্থাপনের সময় আশপাশে বসতি ছিল না। এখন অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এই ঘাঁটি অপরিহার্য।”
তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, “আতঙ্ক নয়, সহযোগিতা চাই। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের পাশে থাকুন, গুজবে কান দেবেন না।”
উল্লেখ্য, সোমবারের এই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩১ জন নিহত হন এবং ১৬০ জনেরও বেশি আহত হন। দুর্ঘটনার পর রাজধানীজুড়ে শোক এবং উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদের মাঝে ক্ষোভ এবং বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে যুদ্ধবিমান ও ঘাঁটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে।
এখন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন বিমান বাহিনী প্রধান।