Tuesday, July 22, 2025
Homeজাতীয়বাংলাদেশে আবারও বিধ্বস্ত এফ-৭ যুদ্ধবিমান, প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে

বাংলাদেশে আবারও বিধ্বস্ত এফ-৭ যুদ্ধবিমান, প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে

একই মডেলের চতুর্থ প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা, পুরনো চীনা জেট নিয়ে বাড়ছে বিতর্ক

ঢাকার উত্তরা এলাকায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই (F-7 BGI) যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২০ জন নিহত এবং ১৭০ জনেরও বেশি আহত হওয়ার পর দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত এই যুদ্ধবিমান নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

এটি ছিল বাংলাদেশে এফ-৭ মডেলের চতুর্থ প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। চীনে তৈরি এ বিমানটি মূলত রাশিয়ান MiG-21 যুদ্ধবিমানের আপগ্রেডেড সংস্করণ। ১৯৭০ সালে চীনের কারিগরি সহায়তায় এর উৎপাদন শুরু হয় এবং ২০১৩ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। এটি তৃতীয় প্রজন্মের একটি যুদ্ধবিমান।

বিশ্বজুড়ে এফ-৭ ব্যবহৃত হয় আকাশ প্রতিরক্ষা, বহুমুখী মিশন ও প্রশিক্ষণের জন্য। তবে এর দুর্ঘটনার হার তুলনামূলকভাবে বেশি। এর প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় পুরনো ডিজাইন, সীমিত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য ও আধুনিক ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমের অভাব।

২০০৮ সালের এপ্রিলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে পাহাড়ীপাড়া গ্রামে একটি এফ-৭ ট্রেনিং জেট বিধ্বস্ত হয়ে স্কোয়াড্রন লিডার মোর্শেদ হাসান নিহত হন। ২০১৫ সালের জুনে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা উপকূলে আরও একটি এফ-৭এমবি বিধ্বস্ত হলে পাইলট তাহমিদ রুম্মান নিখোঁজ হন।

২০১৮ সালের নভেম্বরে মধুপুরে প্রশিক্ষণ চলাকালে আরেকটি এফ-৭ বিজি মডেল বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট আরিফ আহমেদ নিহত হন। ঢাকায় উড্ডয়নের ২৫ মিনিট পর বিমানটি টাঙ্গাইলের রাসুলপুরে পড়ে আগুন ধরে যায়।

আরও পড়ুন: ফাইটার জেট প্রশিক্ষণের জন্য পৃথক ঘাঁটি চাইলেন সাবেক এয়ার ভাইস মার্শাল

বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, ইরান ও অন্যান্য দেশেও এফ-৭ দুর্ঘটনার নজির রয়েছে। ২০১৫ ও ২০২০ সালে পাকিস্তানে তিনজন পাইলট নিহত হন। ২০২২ সালে ইরানের ইসফাহানে বিধ্বস্ত হয়ে দুই পাইলট নিহত হন।

‘ওয়ার থান্ডার’ বলছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য তৈরি এফ-৭ বিজিআই হচ্ছে জে-৭ সিরিজের সবচেয়ে উন্নত ও সর্বশেষ সংস্করণ। নতুন যুদ্ধবিমান আসা পর্যন্ত এটি একটি সাময়িক সমাধান হিসেবেই ক্রয় করা হয়েছিল।

২০২৫ সালেও এই পুরনো যুদ্ধবিমানটি পাকিস্তান, ইরান, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, সুদান, উত্তর কোরিয়া, তানজানিয়া ও জিম্বাবুয়ের মতো দেশে সীমিত আকারে প্রশিক্ষণ ও আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একাধিক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পরও এই পুরনো প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান এখনো ব্যবহার করা কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে এখনই নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। বিশেষ করে, জনবহুল এলাকায় উড্ডয়ন ও প্রশিক্ষণ পরিচালনায় আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হচ্ছে। বিমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন দ্রুত আধুনিকীকরণ ও বিকল্প যুদ্ধবিমান সংযুক্তি।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • ঢাকা

RELATED NEWS

Latest News