ঢাকার উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি এবং ১৭১ জন আহত হওয়ার ঘটনায় গোটা জাতি স্তব্ধ। এমন এক ভয়াবহ মুহূর্তে কোনো ভাষা যথেষ্ট নয় বলেই মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “একটি প্রশিক্ষণ বিমান স্কুল ভবনে আঘাত করেছে। অনেক শিক্ষার্থী আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এখন আমি কী বলব সেই অভিভাবকদের?” আবেগঘন কণ্ঠে ইউনূস বলেন, “আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি কিভাবে শুরু করব তাও জানি না। পুরো জাতি আজ আমার মতোই স্তব্ধ হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “কেউই এ ধরনের কোনো ঘটনা কল্পনাও করেনি। হঠাৎ করেই আমাদের এই বাস্তবতাকে মেনে নিতে হলো। একটি প্রশিক্ষণ বিমান শিশুদের ওপরই আছড়ে পড়েছে।”
আরও পড়ুন: উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে ২০ জনের মৃত্যু, মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোক
জাতির এই শোকের মুহূর্তে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধান উপদেষ্টা এবং সকলকে তাদের আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে ভিড় না করতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
স্মরণযোগ্য যে, সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলার এ কে খন্দকার বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করার কয়েক মিনিট পরই একটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর F-7 BGI প্রশিক্ষণ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় বিমানের পাইলটসহ অন্তত ২০ জন নিহত হন এবং ১৭১ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকেরা। দুর্ঘটনার সময় স্কুলে ক্লাস চলছিল এবং বিমানটি মূল ফটকের কাছে ভবনে গিয়ে আঘাত হানে বলে জানান স্কুলের একজন মুখপাত্র।
আরও পড়ুন: প্রথম একক উড্ডয়নে মর্মান্তিক মৃত্যু, উত্তরার দুর্ঘটনায় পাইলট ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম
জাতীয়ভাবে শোকের আবহে দিনটি পালিত হচ্ছে। সরকার মঙ্গলবারকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে এবং দেশের সব সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
এই দুঃসহ ক্ষতির প্রেক্ষাপটে ইউনূসের বার্তা সাধারণ মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। জাতি এখন এক প্রশ্নের সম্মুখীন—এই শোককে কীভাবে শক্তিতে রূপান্তর করে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে।