Monday, July 21, 2025
Homeঅর্থ-বাণিজ্যযুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়লে ২৫০টির বেশি পোশাক কারখানা ঝুঁকিতে পড়বে: বিজিএমইএ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়লে ২৫০টির বেশি পোশাক কারখানা ঝুঁকিতে পড়বে: বিজিএমইএ

১ আগস্ট থেকে ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হলে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে শতাধিক কারখানার

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হলে। এই শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে আগামী ১ আগস্ট থেকে।

বিজিএমইএ-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২৫০টির বেশি পোশাক কারখানা যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর। এসব কারখানার রপ্তানির ৬০ থেকে ১০০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যায়।

বিজিএমইএ-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান বাবলু জানান, “যেসব রপ্তানিকারকের মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশের বেশি যুক্তরাষ্ট্রে যায়, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”

তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যেই ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কের কারণে ২ থেকে ৫ শতাংশ লোকসান গুনতে হচ্ছে অনেক কারখানাকে। নতুন করে ৩৫ শতাংশ চাপ এলে দীর্ঘমেয়াদে এই বাজারে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে।”

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একক রপ্তানি গন্তব্য। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যার মধ্যে ৭ বিলিয়নের বেশি তৈরি পোশাক।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু জানান, সংগঠনের অধীনে প্রায় ২,৫০০ কারখানা বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানি করে, এর মধ্যে ১,৩২২টি কারখানা যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পাঠায়।

আরও জানা গেছে, বিকেএমইএ-এর অন্তর্ভুক্ত প্রায় ২০০টি কারখানাও যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে, যার মধ্যে ৫০টির বেশি কারখানার রপ্তানির ৬০ শতাংশেরও বেশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারনির্ভর।

হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, “আমার এক বড় ক্রেতা ইতিমধ্যেই মেইল পাঠিয়েছে জানতে চেয়ে, ৩৫ শতাংশ শুল্ক এলে আমি কত ভাগ বহন করবো। বছরে আমি শুধু ওই এক ক্রেতার কাছেই ৮০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য পাঠাই, যার থেকে আমার আয় ১.৩৭ মিলিয়ন ডলার। এখন এই শুল্ক আমি কীভাবে বহন করব?”

তিনি বলেন, “৪০ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে এতো বড় সংকট আমি দেখিনি।”

নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানা মালিক, যিনি পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি, বলেন, “আমার ৮০ শতাংশ রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে। ক্রেতারা বাংলাদেশে এসে আলোচনা করছেন আমি কতটা শুল্ক নিজের কাঁধে নিতে পারব।”

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “এতো বড় বাজারের বিকল্প রাতারাতি খোঁজা সম্ভব নয়। কেউ কেউ হয়তো একটা সিজন চালাতে পারবেন, কিন্তু এরপর রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে।”

সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, ৮২২টি কারখানা তাদের রপ্তানির ২০ শতাংশ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করে। এছাড়া ১৭৬টি কারখানা ২১ থেকে ৪০ শতাংশ, ৮৭টি ৪১ থেকে ৬০ শতাংশ, ৯১টি ৬১ থেকে ৮০ শতাংশ, ৪৬টি ৮১ থেকে ৯০ শতাংশ এবং ১০০টি কারখানা ৯১ থেকে ১০০ শতাংশ রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রমুখী।

এদিকে, শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার জন্য আজ অথবা আগামীকাল যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। তবে এতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তা বা বেসরকারি খাতের কেউ নেই বলে জানা গেছে।

পোশাক শিল্পে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে এমন সিদ্ধান্ত ঠেকাতে সব পক্ষের দ্রুত সমন্বয় ও কূটনৈতিক উদ্যোগের আহ্বান জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

RELATED NEWS

Latest News