লস অ্যাঞ্জেলেসে মার্ভেল স্টুডিওর এক কনফারেন্স রুমে রয়েছে একটি তালাবদ্ধ দরজা। সেই দরজার পেছনে একটি সাদা বোর্ডে লেখা রয়েছে আগামী সাত বছরের সিনেমার রোডম্যাপ। আর এটাই ছিল সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষাপট, যেখানে মার্ভেলের প্রেসিডেন্ট কেভিন ফাইগি প্রথম ডক্টর স্ট্রেঞ্জ খ্যাত বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
দ্য হলিউড রিপোর্টারের সঙ্গে এক গভীর আলোচনায় ফাইগি বলেন, “আমরা অনেক কিছু একসঙ্গে করেছি। কিছু ভুলও করেছি। কিন্তু সামনে আরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে।”
‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’-এর পর মার্ভেল স্টুডিও ৫০ ঘণ্টার পরিবর্তে ১০২ ঘণ্টার সিনেমা ও সিরিজ তৈরি করে, যার মধ্যে অ্যানিমেশন ধরলে সেটা দাঁড়ায় ১২৭ ঘণ্টায়। ফাইগির স্বীকারোক্তি, “এটা ছিল অনেক বেশি।”
তিনি বলেন, “বেশি বানাতে গিয়ে গুণমানের ওপর প্রভাব পড়েছে। দর্শকও প্রশ্ন করতে শুরু করেছে—‘আমি কি সবই দেখতে হবে বুঝতে?’”
এমন অবস্থায় মার্ভেল পিছু হটেছে। কমিয়েছে কনটেন্ট তৈরি। ফাইগি জানান, এখন থেকে বছরে একটা সিনেমা ও একটা সিরিজই হতে পারে। বাজেটও এক-তৃতীয়াংশ কমানো হচ্ছে।
তবে ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর: ফার্স্ট স্টেপস’ নিয়ে তিনি আশাবাদী। “এই সিনেমা একেবারেই স্বতন্ত্র। থ্যানোস কিংবা এটার সঙ্গে ইটারনালদের কোনো সংযোগ নেই। দর্শককে আগের কিছু জানতে হবে না। এটা একদম নতুন অভিজ্ঞতা।”
সাক্ষাৎকারে আরও উঠে আসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
ডাক্টর ডুমই হতে চলেছেন ভবিষ্যতের প্রধান ভিলেন।
ফাইগি বলেন, “ক্যাং যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না। ফক্স অধিগ্রহণের পর আমাদের হাতে ডুম এসেছে। এটিই বড় কাহিনি হতে যাচ্ছে।”‘ব্লেড’ সিনেমা হবে আধুনিক সময়ে।
মাহেরশালা আলি এখনও যুক্ত আছেন। প্রস্তাবিত চারটি কাহিনির মধ্যে দুইটি পিরিয়ড ও দুইটি আধুনিক ছিল। এখন আধুনিকেই স্থির হয়েছে।‘মাইলস মোরালেস’ এখনই আসছে না।
এটি সনি স্টুডিওর হাতে, এবং তারা তাদের অ্যানিমেটেড স্পাইডার-ভার্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত লাইভ-অ্যাকশন ভার্সনে অনুমতি দেবে না।‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’ ও ‘ডেয়ারডেভিল’ প্রমাণ দিচ্ছে মার্ভেল এখন আরও প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট নিয়ে এগোচ্ছে।
পানিশার থাকছে পরবর্তী স্পাইডার-ম্যান সিনেমায়, তবে ভিন্ন টোনে।
ডিজনি প্লাসে ‘টিভি-ম্যাচিউর’ ক্যাটাগরিতে সিরিজ হলেও স্পাইডার-ম্যান ফিল্মে এটি হবে কোমল রূপে।
এছাড়াও, ‘অ্যাভেঞ্জার্স: ডুমসডে’ সিনেমার শুটিং চলছে, যার স্ক্রিপ্ট লিখছেন স্টিফেন ম্যাকফিলি এবং ‘লোকি’ সিরিজের স্রষ্টা মাইকেল ওয়ালড্রন এতে যুক্ত হয়েছেন।
ফাইগি বলেন, “আমি এমন সিনেমা বানাতে চাই যা বিশ্বব্যাপী মানুষ দেখে। এখন মার্ভেল সে প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে। তবে আমি সবসময় বড় পরিসরের গল্প নিয়ে কাজ করতে চাই।”
বেশি তৈরি, কম নিয়ন্ত্রণ আর অতিরিক্ত স্ট্রিমিং কনটেন্টের বোঝা থেকে বেরিয়ে এখন মার্ভেল একটি নতুন ভার্সন তৈরির পথে। কেভিন ফাইগির ভাষায়, “এবার আমরা হোমওয়ার্ক ছাড়া বিনোদন দিতে চাই।”