Tuesday, July 22, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজার দেইর এল-বালাহ এলাকায় নতুন অভিযান, ইসরায়েলের জরুরি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

গাজার দেইর এল-বালাহ এলাকায় নতুন অভিযান, ইসরায়েলের জরুরি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ

অভিযান শুরু হয়নি এমন এলাকাতেও সেনা তৎপরতা বাড়ানোর ঘোষণা; গাজায় প্রাণ হারিয়েছে আরও ৭ জন

গাজার কেন্দ্রীয় অংশ দেইর এল-বালাহ এলাকায় নতুন সামরিক অভিযান শুরুর আগে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

রোববার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের আরবি ভাষার সামরিক মুখপাত্র অ্যাভিচাই আদরেই জানান, দেইর এল-বালাহ এবং আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত ফিলিস্তিনি বাসিন্দা ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের যেন অবিলম্বে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইসরায়েল এই এলাকায় সামরিক তৎপরতা “বিস্তৃত করছে”, এমনকি এমন অংশেও অভিযান চালাবে যেখানে এর আগে কোনো সামরিক উপস্থিতি ছিল না। নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি সবাইকে উপকূলীয় আল-মাওয়াসি অঞ্চলের দিকে সরিয়ে যেতে বলেন।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় প্রায় ২২ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে ইতিমধ্যেই ২০ লাখেরও বেশি জনগণ অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওচা জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাজার ৮০ শতাংশ এলাকা এখনো ইসরায়েল ঘোষিত সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশের আওতায় রয়েছে।

এদিকে, গাজা থেকে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ইসরায়েলের অভিযান সম্প্রসারণে তাদের স্বজনরা আরও বিপদের মুখে পড়তে পারেন।

এক প্রচার সংগঠনের মাধ্যমে তারা ইসরায়েল সরকারের কাছে যুদ্ধ পরিকল্পনা এবং জিম্মিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

মাঠপর্যায়ে, গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানায়, শনিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা সিটি ও দক্ষিণ গাজার কয়েকটি এলাকায় অন্তত ৭ জন নিহত হন।

গত দুই সপ্তাহ ধরে কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের মধ্যে গাজায় ৬০ দিনের অস্ত্রবিরতি এবং ১০ জন জীবিত জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২১৯ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। পাল্টা অভিযানে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৮,৭৬৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বর্তমানে ৪৯ জন জিম্মি এখনো গাজায় বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মৃত বলে মনে করছে।

তেল আবিবে শনিবার এক সমাবেশে জিম্মিদের পরিবার ও নাগরিকরা প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি যুদ্ধ বন্ধ এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।

উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি স্থল অভিযানের মাত্রা আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। তাদের ভাষ্যমতে, “ডজন ডজন সন্ত্রাসী” নিহত হয়েছে এবং “শত শত সন্ত্রাসী অবকাঠামো” ধ্বংস করা হয়েছে।

এছাড়া ওই এলাকায় ২.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২০ মিটার গভীর “আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল” শনাক্ত ও ধ্বংস করার কথাও জানানো হয়েছে।

গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য এই যুদ্ধ আরও বিভীষিকাময় হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জোরালো হলেও ময়দানে এখনো আগ্রাসন অব্যাহত।

RELATED NEWS

Latest News