গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছে ইরান। রোববার দেশটির সামরিক বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ।
গত জুনের মাঝামাঝি ইসরায়েল একটি আকস্মিক এবং ব্যাপক বোমা হামলার মাধ্যমে ইরানে হামলা চালায়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের হামলা ইরানের প্রতিরক্ষা কাঠামোতে বড় ধরণের ধাক্কা দেয়। যুদ্ধ চলাকালীন তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়।
ইরানের সেনাবাহিনীর অপারেশন প্রধান মাহমুদ মোসাভি বলেন, “সেই যুদ্ধের সময় আমাদের কিছু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে এখন সেগুলো পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।”
ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ‘বাভার-৩৭৩’ এবং ‘খোরদাদ-১৫’। ২০১৬ সালে রাশিয়া থেকে আমদানি করা ‘এস-৩০০’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও এতে যুক্ত রয়েছে।
এ যুদ্ধে ইরানে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে দেশটির সরকার দাবি করেছে। অপরদিকে ইরানের হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়।
ইসরায়েলের হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের সামরিক অবকাঠামো এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলো। এর মধ্যে ফোরদো, ইসফাহান এবং নাটানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও হামলা চালানো হয়।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলাকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসাত্মক’ বলেছেন, কিন্তু মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। এনবিসি নিউজ জানায়, তিনটি স্থাপনার মধ্যে কেবল একটি বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২৪ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে এর পরও উত্তেজনা পুরোপুরি কমেনি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির পরও বলেন, “ইরান যেন পুনরায় পারমাণবিক সক্ষমতা গড়ে তুলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।”
এছাড়া জুলাই মাসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, ইরান যেন আবারও হুমকি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে একটি সামরিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতির পর শান্তি থাকলেও দুই দেশের কৌশলগত অবস্থান যুদ্ধাবস্থার সম্ভাবনাকে এখনো পুরোপুরি দূরে সরাতে পারেনি। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।