এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১–এর ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB)-এর চেয়ারপারসন জেনিফার হোমেন্ডি। গুজরাটের আহমেদাবাদে গত ১২ জুনের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৬০ জন যাত্রী।
সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে পাইলটের জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে হোমেন্ডি বলেন, “এই সংবাদগুলো অকাল ও অনুমাননির্ভর। ভারতের এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB) কেবলমাত্র তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই ধরনের তদন্ত সময়সাপেক্ষ এবং অত্যন্ত জটিল।”
এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ প্রকাশিত বিবৃতিতে এনটিএসবি জানায়, “আমরা এএআইবির জনসাধারণের উদ্দেশে দেওয়া বিবৃতিকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি এবং তাদের তদন্তে সহযোগিতা করে যাব। যেকোনো তদন্তসংক্রান্ত প্রশ্ন এএআইবিকেই করা উচিত।”
এদিকে, এয়ার ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী ক্যাম্পবেল উইলসনও অনুরোধ করেছেন যেন কেউ এখনই নিশ্চিত কিছু ধরে না নেয়। তাঁর ভাষায়, “তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জল্পনা বন্ধ রাখাই হবে দায়িত্বশীল আচরণ।”
প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানটির টেকঅফের কিছুক্ষণ পরই দুইটি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ ‘কাট-অফ’ অবস্থানে চলে যায়, যার ফলে উভয় ইঞ্জিনে জ্বালানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। যদিও ১০ সেকেন্ড পর সুইচগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানো হয়, কিন্তু ততক্ষণে বিমানের থ্রাস্ট হারিয়ে যায় এবং দুর্ঘটনা ঘটে।
ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং অনুসারে, ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডার ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়ালকে জিজ্ঞেস করেন, “আপনি সুইচ কেন বন্ধ করলেন?” উত্তরে ক্যাপ্টেন বলেন, “আমি করিনি।” এই কথোপকথনও তদন্তে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
AAIB-র প্রাথমিক প্রতিবেদনের পর ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দেশের সব বোয়িং ৭৩৭ ও ৭৮৭ বিমানগুলোর ফুয়েল কন্ট্রোল সিস্টেম পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে। উদ্দেশ্য হলো যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না তা নির্ণয় করা।
তদন্ত এখনো চলমান। কর্তৃপক্ষের অনুরোধ, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগে কোনো অনুমান ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত।