গোপালগঞ্জে চলমান কারফিউ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
এর আগে শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ আংশিকভাবে শিথিল করা হয়। এই সময়ে শহরের কিছু এলাকায় স্বাভাবিক জীবনের ছাপ দেখা গেলেও তা ছিল সীমিত পরিসরে।
শিথিল সময়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মানুষের চলাচল কিছুটা বেড়েছিল। কিছু দোকানপাট খুলেছিল, আবার ছোট পরিসরে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও শুরু হয়। ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পো চলাচল করতে দেখা যায়। ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলও রাস্তায় চলেছে।
তবে বড় বাজার ও দোকানপাটের বেশিরভাগই বন্ধ ছিল। ফলমূল ও সবজির মতো পচনশীল পণ্যে ব্যবসা করা বিক্রেতারা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
মূল বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী রতন সাহা বলেন, “কারফিউর কারণে তিন দিন ধরে দোকান খুলতে পারিনি। প্রায় ৩০ হাজার টাকার ফল পচে গেছে। আজ সাত ঘণ্টা দোকান খুলেছি, কিন্তু এই সময়ে কতটুকুই বা বিক্রি হবে? বাকি ফলগুলোও নষ্ট হয়ে যাবে।”
বুধবার রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের ওপর হামলার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা, যার মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্যরাও ছিলেন, ওই হামলা চালায়। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজন নিহত হন। পরে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা গেলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচজনে।
শুক্রবার শিথিলতার সময় শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টহল দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে কারফিউ আবার শুরু হওয়ার পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারফিউ বলবৎ থাকবে।