খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়িতে ত্রিপুরা এক কিশোরী ধর্ষণ এবং কারাগারে বম তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ ও ছাত্রদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ করেছে পাহাড়ভিত্তিক বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে বম সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে জানোকি চিসিম বলেন, “জুলাইয়ের গণআন্দোলনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি।” তিনি শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের নয়, দেশের সব ধর্ষণ মামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, “ড. ইউনুস এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তার উচিত হবে জনগণের সকল স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শুধুমাত্র একটি শ্রেণির প্রতি দৃষ্টি না দেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “যদি পাহাড়ি ছাত্র সংগঠনগুলো রাজপথে না নামত, তাহলে জুলাইয়ের গণআন্দোলন সফল হতো না। তাই সব সম্প্রদায়ের অধিকার সমানভাবে দেখতে হবে।”
বাংলাদেশ মারমা ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধি হুসাইন মারমা বলেন, “যখন আমরা মাগুরা ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেই, তখন কোনো বাধা পাই না। কিন্তু যখন ঘটনাটি পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক, তখন আমরা নানা বাধার মুখে পড়ি।”
বক্তারা অভিযোগ করেন, পাহাড়ের ঘটনার প্রতিবাদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন বাধা দেয়, সমতলের ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যায় না। তারা বলেন, এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ না হলে জনগণের আস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
বিক্ষোভে পাহাড়ি ছাত্র সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।
বক্তব্য শেষে একটি প্রতীকী মৌন মিছিল বের হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা পোস্টার ও ব্যানার হাতে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
এই ঘটনায় এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাহাড়ে বারবার ধর্ষণ, নিপীড়ন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের বিক্ষোভকে আরও বিস্তৃত করতে পারে, যা সরকারের জন্য রাজনৈতিক ও মানবিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হতে পারে।