তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতানৈক্য নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তবে ভবিষ্যতে এ ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে হলে গণভোটের মাধ্যমে তা নির্ধারণ করতে হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৪তম দিনের সংস্কার আলোচনার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।
অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত। সেই কারণেই ভবিষ্যতে এই ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে হলে সংবিধানে গণভোটের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব উঠেছে।”
তিনি জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করছেন তারা।
সংবিধান সংশোধন সম্পর্কিত কিছু বিষয়ে আলোচনা অগ্রগতি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চকক্ষ গঠন না হওয়া পর্যন্ত অথবা তা গঠনের পূর্ব পর্যন্ত সংবিধান সংশোধনের জন্য বর্তমান একক সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে সংবিধানের প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের মূলনীতি, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সম্পর্কিত ৫৮বি, ৫৮সি, ৫৮ডি ও ৫৮ই অনুচ্ছেদ সংশোধনের জন্য গণভোটের প্রয়োজন হবে বলে জানান আলী রিয়াজ।
আরও পড়ুন: দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো যায়নি, বললেন বিএনপির সালাহউদ্দিন
তিনি বলেন, “প্রথম দফা আলোচনায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জোট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। কিন্তু উচ্চকক্ষ গঠনের পদ্ধতি নিয়ে এখনও কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।”
কিছু দল ভোটের প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) অনুযায়ী উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যরা বলছে, নিম্নকক্ষে দলগুলোর আসনের অনুপাতে তা গঠন করা হোক। আলোচনা সত্ত্বেও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় বিষয়টি কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে একটি অবস্থানে পৌঁছানোর আশা ব্যক্ত করেন আলী রিয়াজ।
এই আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টি সহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশ নেন।