মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে নির্বাচন পেছানোর গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি মহল দেশে অস্থিরতা তৈরি করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না।”
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন ফখরুল। সমাবেশে মিটফোর্ড হাসপাতালের কাছে কাঁচামাল ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে নিন্দা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “এই ষড়যন্ত্র অত্যন্ত গভীর ও ভয়ংকর। উদ্দেশ্য হলো নতুন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে আবারও অগণতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া।”
তিনি জানান, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে। দলের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, যা আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফখরুল আরও বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস লন্ডনে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
ফখরুল অভিযোগ করেন, “যখন বিএনপি নেতাকর্মীরা ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত, তখনই একটি গোষ্ঠী মিটফোর্ড হত্যাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ যখন মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখনি এই অপশক্তিগুলো নতুন করে বিশৃঙ্খলা তৈরির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করতে চায়।”
তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে অশালীন বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তবে তিনি বলেন, “বিএনপি বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে। এই দল জিয়াউর রহমানের হাতে গঠিত।”
দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “আপনারা কোনো প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমাদের শান্তিপূর্ণ পথে এগোতে হবে এবং শত্রুদের কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না।”
ফখরুল আরও বলেন, “যারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে, তারা প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের শত্রু।”
সমাবেশ শেষে বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা তারেক রহমানকে নিয়ে করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
এর আগে সকালেই ছাত্রদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী একই স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেন। তাদের মিছিল শাহবাগ পর্যন্ত যাওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা দেয়।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হবে।