বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীরা সোমবার একটি অনিরাপদ লেভেল ক্রসিংয়ে সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে তিন ঘণ্টার রেলপথ অবরোধ করেন। কলেজের নতুন ভবনের কাছে অবস্থিত রেলক্রসিংয়ে নিরাপত্তা গেট না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
গত ৬ জুলাই তৃতীয় বর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হোসাইন মোস্তাকিম নাজির ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। তিনি মোটরসাইকেল চালিয়ে অনিরাপদ ক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারান।
সোমবার সকাল ১১টার দিকে কলেজ শিক্ষার্থীরা রেললাইনে জড়ো হয়ে অবরোধ শুরু করেন। তারা দ্রুত গেট নির্মাণ ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানান।
অবরোধের ফলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। সান্তাহার থেকে পঞ্চগড়গামী ‘দোলনচাপা এক্সপ্রেস’ কাহালু স্টেশনে আটকে যায়। লালমনিরহাট থেকে সান্তাহারগামী একটি কমিউটার ট্রেন বগুড়া স্টেশনে থেমে যায়। এছাড়া, ঢাকা থেকে লালমনিরহাটগামী ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ এক ঘণ্টা বিলম্বে বগুড়া স্টেশনে পৌঁছায়।
রেলওয়ে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ প্রসাদ সরকার শিক্ষার্থীদের জানান, সাত দিনের মধ্যে গেটম্যান নিয়োগ করা হবে এবং রেলগেট নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
এ আশ্বাসের পর দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। তবে তারা হুঁশিয়ারি দেন, নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু না হলে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমাদের বন্ধুর মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। একটি গেট থাকলে হয়তো সে বেঁচে থাকত। তাই এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই রেলক্রসিং দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এলাকাবাসী ও কলেজ প্রশাসন একাধিকবার লিখিতভাবে গেট নির্মাণের দাবি জানালেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপদ রেল চলাচলের স্বার্থে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকরা ও সাধারণ মানুষ।