তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস থেকে বরখাস্ত হওয়া এমএলসি টিনমার মল্লান্নার অফিসে হামলার ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। রবিবার হায়দরাবাদের মেদিপল্লিতে মল্লান্নার অফিসে কভিতা নেতৃত্বাধীন তেলেঙ্গানা জাগৃতি কর্মীদের হামলার পর তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী (PSO) আত্মরক্ষার্থে ছয় রাউন্ড গুলি ছোড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত হয় মল্লান্নার বক্তব্যে কভিতাকে নিয়ে করা কিছু ‘আপত্তিকর মন্তব্য’কে ঘিরে। অভিযোগ, কভিতার সমর্থকরা ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে মল্লান্নার অফিসে হামলা চালান। তখন মল্লান্না নিজেই অফিসে উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মী অফিসে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় মল্লান্নার সহযোগীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। এক নিরাপত্তারক্ষীকে মারধরের সময় অন্য নিরাপত্তারক্ষী গুলি ছোড়েন।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তারক্ষী আকাশে গুলি ছুঁড়ছেন।
ঘটনার পর উভয় পক্ষই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। রাচাকোন্ডা পুলিশ জানিয়েছে, মল্লান্না ও কভিতা উভয়ের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। মামলা হয়েছে ভারতীয় নতুন ফৌজদারি আইন (BNS)-এর অধীনে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মল্লান্না বলেন, কভিতার প্ররোচনায় তার ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছে। হামলাকারীরা তার নিরাপত্তারক্ষীর অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালানোর চেষ্টা করে। তিনি প্রমাণসহ থানায় অভিযোগ করেছেন।
মল্লান্না কভিতার সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, তিনি পেছনে না হটে পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য কাজ করে যাবেন।
অন্যদিকে, কভিতা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মল্লান্নার কোনো ব্যক্তিগত মন্তব্য করেননি। তাই তাকেই কেন নিশানা করা হচ্ছে তা বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, “আমি সাধারণ নারী নই, আমি আগুনের স্ফুলিঙ্গ।”
তিনি অভিযোগ করেন, মল্লান্নার মন্তব্যে নারীর মর্যাদায় আঘাত এসেছে। তিনি রাজ্য নারী কমিশন ও জাতীয় নারী কমিশনের দ্বারস্থ হবেন।
কভিতা এ দিন রাজ্য পুলিশের আইজি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভা স্থানীয় সরকারে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ৪২ শতাংশ সংরক্ষণ অনুমোদন দিয়েছে, যা তেলেঙ্গানা জাগৃতির দীর্ঘদিনের দাবির ফল।
তিনি অভিযোগ করেন, মল্লান্না এই অর্জনকে হেয় করে কুরুচিপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করে ৭৪ ও ৭৯ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তেলেঙ্গানা কংগ্রেস সভাপতি বি মাহেশ কুমার গৌড় মল্লান্নার মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, নারীদের প্রতি সম্মান আমাদের সংস্কৃতির অংশ। তবে তিনি অফিসে হামলার ঘটনাকেও আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন।
বিরোধী দল বিএরএস নেতা ও এমএলসি এস মধুসূদনচার্য্য বলেন, মল্লান্না কভিতার কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।