জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে রবিবার এক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন সরকারের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, সড়ক পরিবহন ও রেলপথ মন্ত্রণালয়বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফউজুল কবির খান।
তিনি বলেন, “প্রথমে এটি ছিল নিরীহ এক দাবি-দাওয়ার আন্দোলন, কিন্তু পরে তা সরকারবিরোধী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মোড় নেয়। উদ্দেশ্য ছিল রাজস্ব সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করা এবং দেশের অর্থনীতিতে আঘাত হানা।”
সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সাইদা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এনবিআর কর্মকর্তাদের চলমান প্রতিবাদকে ঘিরে সম্প্রতি উত্তেজনা বাড়ে। ফউজুল বলেন, “একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আন্দোলনের পেছনে রাজনৈতিক প্ররোচনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
তিনি বলেন, “সরকার ধৈর্য ধরেছে। ব্যবসায়ীরা জানতে চেয়েছে, এতদিন আন্দোলন চললো কীভাবে? দমনমূলক পন্থা না নিয়ে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চেয়েছিলাম, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি।”
উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্স অ্যাসোসিয়েশন, এনবিআর কর্মকর্তা, রিফর্ম কমিশন এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে পাঁচ দফা বৈঠক হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “রাজস্ব সংগ্রহে ফিল্ড পর্যায়ের কার্যক্রম যেমন আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট কার্যক্রম আমরা মনিটর করব।”
দুই মাসব্যাপী চলা আন্দোলনের প্রভাবে ব্যবসায়ীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন ফউজুল। তবে তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা সরকারের সংস্কার এজেন্ডাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে কিছু এনবিআর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খানমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, এনবিআরের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধানে রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়ন বিভাগের সচিব নিয়োগের নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সুপারিশ দেবে উপদেষ্টা কমিটি।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন শিপিং ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এবং বাণিজ্য, বস্ত্র ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।