জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, সংবিধানের ১৪১(ক) অনুচ্ছেদে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে নির্দিষ্ট বিধান সংযোজনের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার পররাষ্ট্র পরিষেবা একাডেমিতে চলমান দ্বিতীয় পর্বের দ্বাদশ দিনের আলোচনাসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রস্তাবিত সংশোধনে “অভ্যন্তরীণ গোলযোগ” শব্দগুচ্ছ বাদ দিয়ে তার স্থলে “জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার হুমকি, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ” সংযোজনের সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া, জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার সম্মতির প্রয়োজনীয়তা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে।
এ প্রসঙ্গে আলী রিয়াজ জানান, বিরোধীদলীয় নেতা অথবা তার অনুপস্থিতিতে উপ-নেতাকে সেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে যুক্ত করার কথাও প্রস্তাবিত হয়েছে।
জরুরি অবস্থার সময় সংবিধানের ৪৭(ক) অনুচ্ছেদের শর্ত সাপেক্ষে নাগরিকের জীবনধারণের অধিকার এবং বিচার ও শাস্তি সংক্রান্ত ৩৫ অনুচ্ছেদের মৌলিক অধিকার রহিত করা যাবে না বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।
৭ জুলাই অনুষ্ঠিত আলোচনায় সব রাজনৈতিক দল ও জোট এই সংশোধনীতে সম্মতি প্রকাশ করে।
কমিশনের অন্যান্য সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনি হায়দার সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বিধান সংযোজনেও ঐকমত্য হয়েছে বলে জানান আলী রিয়াজ।
প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারককে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেবেন। তবে কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে স্পষ্টভাবে তা উল্লেখ করে জনগণের ম্যান্ডেট পায়, তাহলে দুইজন জ্যেষ্ঠতম বিচারকের মধ্যে যেকোনো একজনকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিতে পারবেন।
তবে কোনো বিচারক যদি সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অসদাচরণ বা অযোগ্যতার অভিযোগে তদন্তাধীন থাকেন, তাহলে তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের যোগ্য হবেন না বলে জানানো হয়।
আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।