রাজধানীর শাহবাগে একটি কংক্রিটের স্থাপনা ভেঙে ফেলার ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ধোঁয়াশা। সামাজিক মাধ্যমে যার পরিচিতি ছিল ‘প্রজন্ম চত্বর’, সেই কাঠামোটি রবিবার ভোরে ভেঙে ফেলা হয়। তবে এটি কার নির্দেশে এবং কোন উদ্দেশ্যে ভাঙা হয়েছে তা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বক্তব্যে দেখা গেছে অসামঞ্জস্য।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জানিয়েছে, ৬৪ জেলায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন প্রকল্পের অংশ হিসেবে তারা কাঠামোটি ভেঙেছে। তবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অনেক সংস্থা জানিয়েছে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় এবং কোন নির্দেশনাও দেয়নি।
ঘটনাটি সামনে আসার পর গণজাগরণ মঞ্চের অনেক নেতাকর্মী বলেন, এটি প্রকৃত ‘প্রজন্ম চত্বর’ নয়। তাদের মতে, পুরো শাহবাগ চত্বর, থানা থেকে মেট্রো স্টেশনের পাশের ফুট ওভারব্রিজ পর্যন্ত এলাকাকেই ২০১৩ সালে ‘প্রজন্ম চত্বর’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
জানা যায়, ২০০৮ সালে সাবেক আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য নুরুনবী চৌধুরী শাওন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ডিএসসিসি থেকে অনুমতি নিয়ে নিজ খরচে কাঠামোটি নির্মাণ করেন। সেখানে ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন করা হলেও উচ্চ শব্দ ও তীব্র আলোর কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় জাদুঘরের আপত্তিতে পরবর্তীতে স্ক্রিনটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, তারা শুধুমাত্র ভাঙার কাজটি করেছেন, তবে মূল পরিকল্পনাটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। অন্যদিকে, শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাকে মৌখিকভাবে জানানো হলেও কোনও লিখিত নির্দেশনা ছিল না।
তবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত সহকারী এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা জানেন না এমন কোনও ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। একইভাবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশল কর্মকর্তাও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও জানান যে, তাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।
বর্তমানে কাঠামোটি ভাঙা হলেও প্রকৃত ‘প্রজন্ম চত্বর’ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। গণজাগরণ মঞ্চের এক নেতার ভাষায়, এটি ছিল না সেই ঐতিহাসিক চত্বরের অংশ। অন্যদিকে, নুরুনবী চৌধুরী শাওন নির্মিত এই স্থাপনাটি নিয়ে মামলা এখনো চলমান রয়েছে, জানিয়েছে ডিএসসিসির একটি সূত্র।
ঘটনার প্রকৃত দায়িত্ব কার, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট অবস্থান পাওয়া যায়নি।