কার্লোস আলকারাজকে হারিয়ে নিজের প্রথম উইম্বলডন শিরোপা জিতে নিলেন ইতালির জ্যানিক সিনার। রোববার ৪-৬, ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪ সেটে জয় ছিনিয়ে নিয়ে নিজের চতুর্থ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ঘরে তুললেন ২৩ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা।
পুরুষদের টেনিসে ‘বিগ থ্রি’র যুগ শেষের পথে, আর তার শূন্যতা পূরণ করতে এগিয়ে আসছেন সিনার ও আলকারাজ। গত সাতটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যেই ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এই দুই তরুণ তারকা। তবে যেখানে আলকারাজ পরিচিত ঝলমলে খেলার ধরনে, সেখানে সিনার পরিচিত বরফ-ঠান্ডা মনোভাব আর নিখুঁত শটে।
উইম্বলডনে এটি ছিল সিনারের চতুর্থ টানা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল। এর আগে তিনি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শিরোপা জিতলেও তিন মাসের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন একটি নিষিদ্ধ স্টেরয়েড পজিটিভ ধরা পড়ায়। যদিও বিশ্ব অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি জানায়, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু গ্রহণ করেননি। দায় স্বীকার করে শাস্তি ভোগ করেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা শেষে কোর্টে ফিরে মে মাসে ইতালিয়ান ওপেনের ফাইনালে পৌঁছান, যদিও হারতে হয় আলকারাজের কাছে। ফ্রেঞ্চ ওপেনেও ফাইনালে পৌঁছান সিনার, কিন্তু সেখানে তিনটি ম্যাচ পয়েন্ট থাকা সত্ত্বেও জয় ছিনিয়ে নেন আলকারাজ। ফলে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৮-৪ ব্যবধানে এগিয়ে যান স্প্যানিশ তারকা।
তবে উইম্বলডনে পটপরিবর্তন ঘটান সিনার। প্রথম সেট হারানোর পর মেন্টাল স্ট্রেংথ দিয়ে বাকি তিনটি সেট জিতে প্রতিশোধ নেন তিনি। এটি ছিল একটি নিখুঁত পাল্টা আঘাত।
উত্তর ইতালির জার্মান-ভাষী সান ক্যান্ডিদো শহরে জন্ম নেওয়া সিনার এক সময় ছিলেন স্কিইং চ্যাম্পিয়ন এবং ফুটবলপ্রেমী। পরে টেনিসকেই বেছে নেন পেশা হিসেবে।
২০২০ সালে সোপিয়া ওপেনে প্রথম শিরোপা জেতেন তিনি। ২০২৪ ছিল তাঁর ব্রেকথ্রু বছর—অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ইউএস ওপেনসহ মোট আটটি শিরোপা অর্জন করেন তিনি। গত বছর জুনে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে ওঠেন, যা ছিল কোনো ইতালীয় খেলোয়াড়ের প্রথম।
তাঁর কোচ ড্যারেন কাহিল বলেন, “সে মাত্র ২৩ বছর বয়সী হলেও অনেক পরিপক্ব। কোর্টে তার উপস্থিতি সব সময় শান্ত এবং আত্মবিশ্বাসী।”
নিজের খেলার প্রতি ভালোবাসার কথাও লুকান না সিনার। তিনি বলেন, “ছোটবেলায় টেনিস ছিল শখ। এখন সেটা পেশা হলেও আমার কাছে এখনও শখের মতোই মনে হয়। জনাকীর্ণ স্টেডিয়ামে খেলাই সবচেয়ে ভালো অনুভূতি।”