Monday, July 14, 2025
Homeআন্তর্জাতিকমিয়ানমারে বিমান হামলায় শিশুসহ ২২ জন নিহত, ধ্বংস মঠ

মিয়ানমারে বিমান হামলায় শিশুসহ ২২ জন নিহত, ধ্বংস মঠ

সাগাইং অঞ্চলে আশ্রয় নেয়া মঠে রাতভর বোমাবর্ষণ, মঠ সম্পূর্ণ ধ্বংস

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে সাগাইং অঞ্চলের একটি বৌদ্ধ মঠে শুক্রবার ভোররাতে চালানো বিমান হামলায় শিশুসহ অন্তত ২২ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন একজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং একজন সামরিক জান্তা বিরোধী যোদ্ধা।

বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে বলে জানানো হয়। আরও দুইজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে লিন তা লু গ্রামের একটি মঠে আশ্রয় নেয়া অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের ওপর এই হামলা চালানো হয়।

একজন জান্তা-বিরোধী যোদ্ধা জানান, “তারা ভেবেছিল মঠে থাকা নিরাপদ, কিন্তু সেখানেই বোমা ফেলা হয়।”

তিনি বলেন, “এই মঠে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতরা আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু সেখানেই জান্তা বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে।”

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বোমা বিস্ফোরণে মঠ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। তিনি আরও জানান, ভোরবেলায় নিহতদের মরদেহ গাড়িতে করে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

“আমি কবরস্থানে গিয়ে ছবি তুলতে গিয়েছিলাম, সেখানেই ২২টি মরদেহ দেখি। অনেক মরদেহের মাথায় আঘাত ছিল, কেউ কেউ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এটা ছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক,” বলেন তিনি।

মিয়ানমারে ২০২১ সালে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের পর থেকে দেশটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে সাগাইং অঞ্চল একাধিক বিমান হামলা ও সংঘর্ষের শিকার হচ্ছে।

গত মার্চে এই এলাকাতেই ৭ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়, যাতে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ জন প্রাণ হারায় এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়।

সেই সময় সাময়িকভাবে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি হয় বলে জানা যায়। তবে সংঘর্ষ ও বিমান হামলা বন্ধ হয়নি।

এর আগেও গত মে মাসে সাগাইং অঞ্চলের ওয়ে থেইন কুইন গ্রামে একটি স্কুলে বিমান হামলায় ২০ শিক্ষার্থী ও দুই শিক্ষক নিহত হন।

জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এবারের হামলা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক মহলের চাপ থাকা সত্ত্বেও জান্তা সরকার অব্যাহতভাবে মানবিক আইনের লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।

মিয়ানমারে চলমান এই সহিংসতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

RELATED NEWS

Latest News