রাজধানীর মিতফোর্ড হাসপাতালে প্রকাশ্যে স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সোহাগকে পাথর দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করায় গভীর উদ্বেগ ও রহস্যের ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন—যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, “যারা ভিডিও ফুটেজে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত, তারা মামলার মূল আসামি নন। অথচ যাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, এমন তিনজনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর কারণ আমরা বুঝতে পারছি না।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর ৬০ ঘণ্টার বেশি পেরিয়ে গেলেও মূল হত্যাকারীরা ধরা পড়েনি। এটা শুধু প্রশ্ন নয়, একটি বড় রহস্য।”
মুন্না অভিযোগ করেন, মামলার বাদীর কন্যা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন যে তিনজন প্রকৃত অপরাধীকে বাদ দিয়ে তিন নিরীহ ব্যক্তিকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। “এটা কেন এবং কার নির্দেশে হলো, তা আমরা জানতে চাই।”
তিনি বলেন, “ঘটনাটি বুধবার ঘটলেও তা গণমাধ্যমে আসে শুক্রবার। এই বিলম্ব কারা ঘটিয়েছে এবং এর পেছনে কোনো পরিকল্পিত চক্রান্ত আছে কিনা, সেটাও তদন্তের দাবি রাখে।”
সংবাদ সম্মেলনে মুন্না আরও জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের কাউকে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল বা ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে শনাক্ত করা যায়নি। তবে মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম আসায় তিন সংগঠনের পাঁচজন নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, যেন তারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনে।”
প্রসঙ্গত, বুধবার দিনদুপুরে পুরান ঢাকার মিতফোর্ড হাসপাতালের সামনে মোহাম্মদ সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তাকে পাথর ও ইট দিয়ে আঘাত করছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
পুলিশ জানায়, হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই রাতেই বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন থেকে পাঁচজন অভিযুক্তকে বহিষ্কার করা হয়।
যুবদল সভাপতি বলেন, “সোহাগ একজন ব্যবসায়ী এবং যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। দিনে-দুপুরে তাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা সভ্য সমাজে অকল্পনীয়। আমরা এই বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”