হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমানের একটি ফ্লাইটে ভুয়া বোমা হুমকির ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ বলেন, “শুক্রবারের ঘটনার পর আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আইনের আওতায় আনা হবে।”
তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং বিমান পরিচালনার সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। কেউ যদি তা বিঘ্ন ঘটায়, তবে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
সিভিল অ্যাভিয়েশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিমানের কার্যক্রম ইচ্ছাকৃতভাবে বা বেপরোয়াভাবে বাধাগ্রস্ত করা এবং যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকিতে ফেলা গুরুতর অপরাধ। এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
শুক্রবার বিকেলে বিমানের কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইট বিগি-৩৭৩ যখন রানওয়েতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে একটি অজ্ঞাত কল আসে যাতে বলা হয়, উক্ত ফ্লাইটে বোমা রয়েছে। ফ্লাইটটিতে ১৪২ জন যাত্রী ও সাতজন ক্রু ছিলেন।
সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিমানবাহিনী, এভসেক, র্যাব ও এপিবিএন এর সমন্বয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। বিমান ও যাত্রীদের মালামাল তল্লাশি করে কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
সন্ধ্যা ৭টা ৫৮ মিনিটে তল্লাশি শেষ হয় এবং রাত ৯টা ২২ মিনিটে বিমানটি নিরাপদে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক একেএম শাহিদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ওই ভুয়া কলদাতাও রয়েছেন।
তদন্তে জানা গেছে, কলটি করেছিলেন একজন যাত্রীর মা, যিনি তার ছেলেকে তার বিবাহবহির্ভূত সঙ্গীর সঙ্গে কাঠমান্ডু যেতে বাধা দিতে চেয়েছিলেন।
র্যাব মহাপরিচালক ঘটনাটিকে “দুঃখজনক” উল্লেখ করে বলেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের ভাবমূর্তি এবং জাতীয় বিমান সংস্থার সুনাম ক্ষুণ্ন করে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনায় কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”