Friday, July 11, 2025
Homeজাতীয়বরিশাল ও ভোলায় ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা, নদীভাঙন ও যান চলাচলে স্থবিরতা

বরিশাল ও ভোলায় ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা, নদীভাঙন ও যান চলাচলে স্থবিরতা

একদিনেই ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টি, জলমগ্ন বরিশাল শহর ও ভোলার উপকূলীয় এলাকা

টানা বর্ষণে বরিশাল শহর ও আশপাশের উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত বরিশালে ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। নদীর পানি শহরের বিভিন্ন নিচু এলাকায় ঢুকে পড়ায় জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

আবহাওয়াবিদ আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, বর্ষার প্রভাবে আগামী দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। নদীবন্দরে এক নম্বর এবং সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

চলমান বৃষ্টিতে বরিশাল শহরের প্রধান সড়কগুলোসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। সরকারি বিএম কলেজ, বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।

শহরের আমানতগঞ্জ, কলেজ রোড, গোরস্থান রোড, বটতলা এলাকায় দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, প্রধান নালাগুলো পরিষ্কার করা হলেও গলির ছোট ড্রেনগুলো অবরুদ্ধ থাকায় পানি নামছে না।

তিনি বলেন, “নগরের খালগুলো পরিষ্কারের জন্য পাঁচটি দলের ১০০ জন কর্মী প্রতিদিন কাজ করছে।”

পালাশপুর এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বেগম বলেন, “বৃষ্টি থেমে গেলেও দুই মাস ধরে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাতে হয়। ড্রেন ও খাল ঠিকভাবে পরিষ্কার না করায় ময়লা পানি জমে থাকে।”

এদিকে, উপকূলীয় জেলা ভোলার নিম্নাঞ্চলও বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।

ভোলা বিআইডব্লিউটিসি ইনস্পেক্টর জসিম উদ্দিন খান জানান, ১০টি রুটের মধ্যে ১৩টি সী-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে।

মনপুরা উপজেলার ইউএনও লিখন বনিক জানান, তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। তিনটি পাম্প বসিয়ে পানি সরানোর কাজ চলছে।

চরনবাবদ মাঝিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, “এই এলাকায় ৮১টি বাড়ি দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।”

ভোলার জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আশাকরি পানি দ্রুত নেমে যাবে।”

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, “ভারি বৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে নদীর পানি বেড়েছে। তাজুমদ্দিন পয়েন্টে মেঘনা নদী বিপদসীমার চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।”

আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী কয়েকদিন এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

RELATED NEWS

Latest News