বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বুধবার সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
এমন আহ্বানের পেছনে রয়েছে বিবিসির এক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন, যেখানে একটি অডিও ক্লিপ বিশ্লেষণ করে দাবি করা হয়েছে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবাদ দমন করতে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অ্যামনেস্টির পক্ষ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত অডিও নতুন প্রমাণ উপস্থাপন করে, যা রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের পেছনে উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার ইঙ্গিত দেয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘের এক অনুসন্ধানী রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, ওই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হন।
এই মৃত্যুর অধিকাংশই ঘটেছে সামরিক রাইফেল ও শটগান থেকে ছোড়া ধাতব গুলিতে, যা সাধারণত নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ গুরুতর আহত হন, যাদের অনেকে আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত দাবি করে বলেছে, যারা সরাসরি সহিংসতায় জড়িত ছিলেন অথবা নির্দেশ দিয়েছেন, তাদের সবাইকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
এক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড যেন প্রক্রিয়ার অংশ না হয়, সে বিষয়টিও জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসরণ করে, অ্যামনেস্টি বলছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন রোম সংবিধির ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাছে বিষয়টি পাঠায়।
এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই অপরাধগুলোর বিচার না হলে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার সংস্কৃতি আরও গভীর হবে এবং বিচারহীনতার ধারায় নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।”
মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন অভিযোগ সামনে আসায় আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি আরও আলোচনার কেন্দ্রে আসতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।