পাল্লেকেলেতে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৯৯ রানে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই জয়ের মাধ্যমে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করল স্বাগতিক দল।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ম্যাচে ২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৯.৪ ওভারে মাত্র ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শুরুটা ভালো করলেও ইনিংসের মাঝপথেই চাপের মুখে ভেঙে পড়ে টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপ।
তৌহিদ হৃদয় ৫১ রান করে লড়াই চালালেও বাকিরা বড় রান করতে ব্যর্থ হন। পারভেজ হোসেন ইমন ও মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে দুটি স্বল্পমেয়াদী জুটি গড়লেও সেটা ম্যাচের মোড় ঘোরাতে যথেষ্ট ছিল না।
শ্রীলঙ্কার পেসার দুশমন্থ চামিরা (৩/৫১) ও অসিথা ফার্নান্দো (৩/৩৩) বল হাতে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখান। শুরুর ধাক্কার পর আবারও ফিরে এসে তাঁরা বাংলাদেশের টেইল অর্ডার একেবারে গুঁড়িয়ে দেন। স্পিনাররাও মাঝ ওভারে রান আটকে দিয়ে ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলেন।
বাংলাদেশের বোলাররা যদিও প্রথম ইনিংসে ভালো বল করে শ্রীলঙ্কাকে ২৮৫ রানে আটকে রাখে। মেহেদি হাসান ও তাসকিন আহমেদ ২টি করে উইকেট শিকার করেন। শেষ দিকে তানজিম হাসান সাকিব ও শামীম হোসেনের নিয়ন্ত্রিত বোলিং কিছুটা স্বস্তি দেয়।
তবে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের মূল স্তম্ভ ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার কুশল মেন্ডিস। ১১৩ বলে ১২৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে তিনি দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন। ইনিংসে ছিল ১৮টি চারের ঝলক। চতুর্থ ওভারে ১৩ রানে এক উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে ১২৪ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস। আসালাঙ্কা করেন ৫৮ রান।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুযোগ হাতছাড়া করলেও তৃতীয় ম্যাচে প্রয়োজনীয় ধৈর্য ও টেম্পারমেন্ট দেখান মেন্ডিস। তাঁর ব্যাটে ভর করেই সুবিধাজনক স্কোর পায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে জয়ের দোরগোড়ায় গিয়েও হার মানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৬ রানে জয় পেলেও তৃতীয় ও নির্ধারণী ম্যাচে ফের ব্যর্থতার চিত্র ফুটে ওঠে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চাপ সামলাতে না পারা ও ব্যাটিং ব্যর্থতা ছিল প্রধান কারণ।
এই হারে আবারও প্রকাশ পেল টাইগারদের মধ্য ওভারে উইকেট নেওয়ার অক্ষমতা এবং বড় ম্যাচে চাপ সামলানোর ঘাটতি।
সিরিজ জয়ে শ্রীলঙ্কার সব বিভাগে সমন্বিত পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসনীয়। মেন্ডিস হয়েছেন ম্যাচসেরা।
বাংলাদেশ দলের সামনে এখন আত্মসমালোচনার সময়। বড় টুর্নামেন্টের আগে এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী সিরিজগুলোতে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।