ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার পাঁচটি পয়েন্টে মুহুরী নদীর তীব্র ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এসব এলাকায় বাঁধ ভেঙে পড়ে। ফলে আশেপাশের বসতবাড়ি, কৃষিজমি এবং কাঁচা রাস্তা পানিতে ডুবে যায়।
প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপে মুহুরী নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে গেলে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ফুলগাজীর জঙ্গল ঘোনা এলাকায় দুটি পয়েন্টে এবং গদনগর, দেরপাড়া ও সাহেবনগর এলাকায় তীব্র ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করে। বাঁধ ভেঙে গেলে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। তখন গবাদিপশুসহ প্রাণ বাঁচিয়ে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে বাধ্য হন তারা। অনেক পরিবার রাতের অন্ধকারে স্থানত্যাগ করেছেন।
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার জানান, “বিপদাপন্ন এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে জিও ব্যাগ ও বালুভর্তি বস্তা ফেলার কাজ চলছে। নদীর পানি এখনো বাড়ছে, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতি বর্ষায় মুহুরী নদীর একই পয়েন্টে ভাঙন দেখা যায়। সাময়িক মেরামত বা বালুর বস্তা ব্যবহারে সামান্য উপকার হলেও দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ ও টেকসই ডিজাইন না থাকায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয় না।
তারা বলেন, “নদী শুধু আমাদের জীবিকা নয়, এটা আমাদের প্রাণ। আর বারবার একই দুঃসহ অভিজ্ঞতা আমাদের বিপর্যস্ত করে তুলছে। এখন সময় হয়েছে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার।”
জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে। তবে সাধারণ মানুষ স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের অপেক্ষায় আছেন।