Wednesday, July 9, 2025
Homeঅর্থ-বাণিজ্যবাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর আশা

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর আশা

ট্রাম্প প্রশাসনের ৩৫% শুল্ক হ্রাসে আলোচনার ইঙ্গিত দিলেন বাণিজ্য সচিব

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্কের পরিপ্রেক্ষিতে শুল্ক হ্রাসের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। ফ্রান্সভিত্তিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে মঙ্গলবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর (USTR) থেকে একটি নতুন খসড়া পর্যালোনার জন্য পাঠানো হয়েছে, যা শুল্ক হার হ্রাসের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশ। এখানকার তৈরি পোশাক খাত রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ আয় এনে দেয়। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের ফলে সরকার পতনের পর খাতটি পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

মাহবুবুর রহমান জানান, “আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে এই ইস্যুতে কাজ করছেন।”

বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। বিপরীতে আমদানি করেছে ২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় পোশাক ব্র্যান্ড যেমন Fruit of the Loom, Levi Strauss ও VF Corp (যার ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে Vans, Timberland ও The North Face) বাংলাদেশ থেকে পোশাক সংগ্রহ করে থাকে।

চলতি বছরের ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। পরে এক বিবৃতিতে তিনি তা কমিয়ে ৩৫ শতাংশে নামানোর কথা জানান। যা তুলনামূলকভাবে তুলার পণ্যে আরোপিত ১৬ শতাংশ শুল্কের দ্বিগুণেরও বেশি।

বাংলাদেশ এই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোয়িং উড়োজাহাজ ক্রয়, গম, তুলা ও তেল আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে। এতে বাণিজ্য ঘাটতি কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেছেন, “এটা আমাদের পোশাক খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা ভেবেছিলাম, শুল্ক হার ১০ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে থাকবে।”

তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান মোহাম্মদ ইউনুস এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মোহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “বর্তমান শুল্কহার থাকলে চাকরি হারানোর শঙ্কা দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রধান রপ্তানি বাজার। আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য সংলাপ আবার শুরু করা দরকার।”

বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি কেবল অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও গুরুত্ব সহকারে মোকাবিলা করা জরুরি। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর বাণিজ্য নীতির ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সময়োচিত কৌশলগত পদক্ষেপের ওপর।

RELATED NEWS

Latest News