Tuesday, July 8, 2025
Homeআন্তর্জাতিকলাহোরে রাস্তায় পালানো সিংহের তাণ্ডব, নারী ও শিশুকে আক্রমণ

লাহোরে রাস্তায় পালানো সিংহের তাণ্ডব, নারী ও শিশুকে আক্রমণ

ব্যস্ত সড়কে পোষা সিংহের হামলায় আহত তিনজন, আটক হয়েছে তিনজন মালিকপক্ষ

পাকিস্তানের লাহোর শহরের এক ব্যস্ত সড়কে বৃহস্পতিবার রাতে একটি পোষা সিংহের আকস্মিক হামলায় এক নারী ও তার দুই সন্তান আহত হয়েছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একটি বাড়ির প্রাচীর টপকে বেরিয়ে আসা ১১ মাস বয়সী পুরুষ সিংহটি প্রথমে বাজার করে ফেরার পথে এক নারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সিংহটির আক্রমণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই নারী। পরে সিংহটি পাশে থাকা পাঁচ ও সাত বছর বয়সী দুই শিশুর ওপরও হামলা চালায় এবং তাদের মুখ ও হাতে নখ দিয়ে আঁচড় দেয়।

আহত তিনজনকেই তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা আশঙ্কাজনক নন।

ঘটনার পরপরই পুলিশ একটি অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। এতে আহত শিশুর বাবা জানান, হামলার সময় বাড়ির মালিকরা বাইরে এসে সিংহের তাণ্ডব দেখে “বিস্মিত না হয়ে বরং মজা পাচ্ছিলেন”। তিনি আরও বলেন, তারা সিংহটিকে টেনে নিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিনজনকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিংহটিকে জব্দ করে স্থানীয় বন্যপ্রাণী উদ্যানে পাঠানো হয়েছে। উদ্যানে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিংহটি সুস্থ আছে এবং পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

পাঞ্জাব প্রদেশে বহুদিন ধরে ধনী ও প্রভাবশালীরা সিংহসহ নানা বন্যপ্রাণীকে পোষা প্রাণী হিসেবে রাখার প্রবণতা গড়ে তুলেছে। এটি সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। তবে এই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তির কারণে জননিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরেও লাহোরের অন্য একটি এলাকায় এক পূর্ণবয়স্ক সিংহ খাঁচা থেকে পালিয়ে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। পরে এক নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারায় সেই সিংহটি।

এই ঘটনার পর পাঞ্জাব সরকার বড় বিড়াল প্রজাতির পশুদের কেনাবেচা, পালন ও প্রজনন নিয়ে একটি নতুন আইন পাশ করে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বড় বিড়াল পালনের জন্য লাইসেন্স আবশ্যক এবং বাসাবাড়িতে এই ধরনের প্রাণী রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

এছাড়া যারা বন্যপ্রাণী প্রজনন করবেন, তাদের বড় অঙ্কের রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে হবে এবং খামারের আয়তন অন্তত ১০ একর হতে হবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভও দেখা দিয়েছে এমন দায়িত্বহীনতার ঘটনায়।

RELATED NEWS

Latest News