রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শিক্ষার মান, রাজনৈতিক প্রভাব এবং দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের বিষয়ে গভীর দৃষ্টিপাত করেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে “সৃজনশীলতা, গবেষণা ও নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতি ও বিশ্বকে পথ দেখানো” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “শিক্ষকদের দায়িত্ব শুধু পাঠদান নয়, তারা যেন রাজনৈতিক গোষ্ঠীবাদ নয় বরং মেধাকে প্রাধান্য দেন।”
তিনি বলেন, “যে প্রজন্ম দুঃসাহসী ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করেছে, তারা দেশ গড়ার কাজেও সফল হবে।”
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ড. শামসুজ্জোহা আমাদের শিক্ষক সমাজের আদর্শ। আজ সেই মানদণ্ড অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব শিক্ষাদান, রাজনীতি নয়।”
ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা অনেক কিছু অর্জন করেছ, তবে তা জনগণের সহায়তায়। শিক্ষকের মর্যাদা যেন কোনো পরিস্থিতিতে ক্ষুণ্ন না হয়। সমস্যা থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত।”
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রার জন্য প্রয়োজন ‘এইটুকু কি যথেষ্ট’— এমন একটি আত্মজিজ্ঞাসা।”
তিনি বলেন, “অসুস্থ রাজনীতি আমাদের সাফল্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এখনো রাজনৈতিক প্রভাব আছে। এসব না রুখতে পারলে আগের অবস্থায় ফিরে যাব।”
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা মেধাবী শিক্ষার্থী পাই ঠিকই, কিন্তু গুণগত শিক্ষকের অভাব রয়েছে। অদক্ষ নীতিতে চললে আরও সংকটে পড়ব।”
তিনি ছাত্র ও সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রশ্ন করেন, “আমরা কি বিশ্ববিদ্যালয়কে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে চাই, না কি রাজনীতির হাতিয়ার বানাতে চাই?”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম খান।
এর আগে প্রশাসন ভবনের সামনে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দিবসের সূচনা হয়। পরে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা উপাচার্যের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন।