Friday, July 4, 2025
Homeজাতীয়বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প গঠনে তিন স্তম্ভভিত্তিক রোডম্যাপ ঘোষণা

বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প গঠনে তিন স্তম্ভভিত্তিক রোডম্যাপ ঘোষণা

জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্স দেশের প্রযুক্তি সক্ষমতা ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে ডিজাইন, টেস্টিং ও প্যাকেজিংকে অগ্রাধিকার দিতে সুপারিশ করেছে

বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান ও টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “টাস্কফোর্স তিনটি অগ্রাধিকার খাত নির্ধারণ করেছে: দক্ষতা উন্নয়ন, ব্যবসায়িক পরিবেশ ও নীতিগত সহায়তা এবং বৈশ্বিক সংযোগ ও অংশীদারিত্ব।”

প্রাথমিকভাবে ডিজাইন, টেস্টিং ও প্যাকেজিং খাতে জোর দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে চিপ ফ্যাব্রিকেশন খাত অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স। কারণ এই খাত পুঁজি ও প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় তাৎক্ষণিক বিনিয়োগ উপযোগী নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আশিক চৌধুরী বলেন, “২০২৭ সালের মধ্যে পাঁচটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে EDA টুলসসহ মানসম্মত ট্রেনিং ল্যাব স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছে টাস্কফোর্স।”

এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমিক প্রশিক্ষণের জন্য রোটেশনভিত্তিক ক্যালেন্ডার চালুর প্রস্তাব এসেছে। পাশাপাশি সারা দেশে হ্যাকাথন, আউটরিচ প্রোগ্রাম ও ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ আয়োজনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বিশেষায়িত এমএসসি, পিএইচডি ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা চালুর কথা বলা হয়েছে।

টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে গবেষণা, অ্যাসেম্বলি ও প্যাকেজিং কারখানাগুলোর জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ বছর পর্যন্ত কর ছাড় দেওয়ার সুপারিশ এসেছে।

তারা আরও প্রস্তাব করে, আইসিটি বিভাগ বা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে একটি “সেমিকন্ডাক্টর ফান্ড” গঠন করা হোক, যেটি স্টার্টআপ মডেলের মতো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সহায়তা বা টার্ম ফাইন্যান্সিং দেবে।

বিডার নেতৃত্বে পরিচালিত National FDI Heatmap Exercise-এ সেমিকন্ডাক্টর খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আশিক চৌধুরী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রচুর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিভা ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ডিজাইন ও টেস্টিংয়ের পর্যায়ে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।”

বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. এ বি এম হারুন-উর-রশিদ এ সময় বলেন, “লেভেল ১ থেকে ৩ পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোর্স চালুর জন্য একটি ভার্চুয়াল নলেজ পোর্টাল তৈরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি জানান, অনলাইন ও সরাসরি পাঠদানের সংমিশ্রণে এই কোর্সগুলো পরিচালিত হবে। এতে দ্রুত ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারদের প্রস্তুত করা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত বর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত কোর্স চালু এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে RTL, DFT, STA ইত্যাদি বিষয়ক ১২ সপ্তাহের কোর্স চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।”

আন্তর্জাতিক আদান-প্রদান, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও প্রবাসী একাডেমিশিয়ানদের মাধ্যমে শিক্ষক উন্নয়ন ও কারিকুলাম হালনাগাদের প্রস্তাবও এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিডার হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রোচিও উপস্থিত ছিলেন।

RELATED NEWS

Latest News