Friday, September 26, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজায় সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত ৩৮, মোট প্রাণহানি ৮২ জন

গাজায় সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত ৩৮, মোট প্রাণহানি ৮২ জন

মানবিক সহায়তার আশায় অপেক্ষমাণদের ওপর বিমান হামলা ও গুলিবর্ষণে রাতেই প্রাণ হারালেন বহু ফিলিস্তিনি

গাজায় এক রাতে বিমান হামলা ও গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন ছিলেন মানবিক সহায়তার আশায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়। বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের আশপাশে হামলায় পাঁচজন এবং বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ ট্রাকের জন্য অপেক্ষায় থাকা ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এই ফাউন্ডেশনটি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গোপনে গঠিত একটি সংস্থা, যা ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষকতায় গাজাবাসীর খাদ্য সহায়তায় কাজ করছে।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনো এসব হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য দেয়নি।

বুধবার গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত একাধিক স্থানে চালানো বিমান হামলায় বহু মানুষ নিহত হন। দক্ষিণ গাজার মুয়াসি এলাকায় শরণার্থী তাবুতে হামলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গাজা শহরের একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের ওপর চালানো আরেকটি হামলায়ও হতাহত হয়েছেন অনেকে।

মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৭ হাজার

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে ২২৩ জন নিখোঁজ হিসেবে ঘোষিত হলেও তারা মৃত বলে বিবেচিত। মৃতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।

গত ২১ মাসের সংঘর্ষে গাজা এখন এক মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। অধিকাংশ শহর ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। দুই কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার অধিকাংশই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য ও চিকিৎসার সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

অস্ত্রবিরতি নিয়ে আশা-উৎকণ্ঠা

এমন এক পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সম্ভাব্য ৬০ দিনের অস্ত্রবিরতির আলোচনা চলছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েল প্রস্তাব মেনে নিয়েছে, এখন হামাসের সম্মতির অপেক্ষা।

তবে হামাস বলছে, যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ না হলে তারা অস্ত্রবিরতির শর্ত মানবে না। এই অবস্থান অস্ত্রবিরতির বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

ইসরায়েলের দাবি ও হামাসের অবস্থান

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার ঘটনায় হামাসের অবস্থান ও রকেট লঞ্চার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তারা দাবি করছে, সাধারণ মানুষের ক্ষতির জন্য দায়ী হামাসই, যারা জনবহুল এলাকায় অবস্থান নেয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন জঙ্গিরা দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায়। সে সময় ১২০০ মানুষ নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকেই শুরু হওয়া যুদ্ধে পুরো গাজা ভূখণ্ড কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই যুদ্ধ বন্ধ না হলে প্রাণহানি ও মানবিক বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে।

RELATED NEWS

Latest News