Friday, July 4, 2025
Homeআন্তর্জাতিকএভারেস্টে আবর্জনা সরাতে ব্যবহার হচ্ছে ড্রোন, হিমালয়ের উচ্চতায় প্রযুক্তির নতুন মিশন

এভারেস্টে আবর্জনা সরাতে ব্যবহার হচ্ছে ড্রোন, হিমালয়ের উচ্চতায় প্রযুক্তির নতুন মিশন

মানববর্জ্য, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও decades পুরনো আবর্জনা সরাতে শেরপাদের পাশে এখন প্রযুক্তির হাত

বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়া থেকে শুরু করে বেইস ক্যাম্প পর্যন্ত জমে থাকা আবর্জনা এখন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশ ও শেরপাদের জন্য। দীর্ঘদিন ধরে মানববর্জ্য, খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার, রান্নাঘরের অবশিষ্ট খাবার ও পুরনো মই সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করছেন শেরপারা। তবে এবার তাদের সহায়ক হিসেবে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি।

সম্প্রতি শেষ হওয়া পর্বতারোহণ মৌসুমে চীনের তৈরি দুটি ড্রোন, ডিজেআই ফ্লাইকাট ৩০, সফলভাবে ক্যাম্প-১ থেকে প্রায় ৭০০ মিটার নিচে বেইস ক্যাম্প পর্যন্ত ২৮০ কেজির বেশি আবর্জনা বহন করে এনেছে।

এই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে নেপালভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এয়ারলিফট টেকনোলজি, এবং স্থানীয় পরিবেশ সংস্থা সাগরমাথা পলিউশন কন্ট্রোল কমিটির সহায়তায়।

৩৩ বছর বয়সী অভিজ্ঞ শেরপা লাখপা নুরু জানান, এবার তার দল যে পরিমাণ আবর্জনা নামিয়েছে, তার প্রায় ৭০ শতাংশ ড্রোনের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে।

শুধু দুর্গন্ধ নয়, গলিত বরফ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই আবর্জনা এখন পানি দূষণের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলেছে। বরফ গলে পুরনো আবর্জনা ভেসে উঠছে, যা নদী ও পাহাড়ি গ্রামগুলোর পানির উৎসকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।

২০১৯ সাল থেকে এভারেস্ট ও তার আশপাশের পাহাড় থেকে ১০০ টনের বেশি বর্জ্য সরিয়ে ফেলেছে নেপালের সেনাবাহিনী ও শেরপার দল।

প্রতি বছর যারা বেইস ক্যাম্পের উপরে ওঠেন, তাদের ৮ কেজি করে আবর্জনা ফিরিয়ে আনার নিয়ম চালু করা হয়েছে। না মানলে হারাতে হয় ৪ হাজার ডলারের জামানত।

এবারের এই ড্রোন প্রকল্পে ৭০ হাজার ডলার মূল্যের প্রতিটি ড্রোন -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ঘণ্টায় ৪০ কিমি বেগের বাতাসে ওড়ার ক্ষমতা রাখে।

তবে সমস্যা একটাই, উচ্চতার কারণে ড্রোনগুলো এখনো ক্যাম্প-২ বা তার উপরের এলাকায় যেতে পারছে না। বাতাস বেশি থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এপ্রিলের এক ফ্লাইটে এক ড্রোন তীব্র বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সেজন্য প্রকল্প বিস্তারে বিশেষায়িত বিমা সুবিধা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সাগরমাথা কমিটির সিইও ছেড়িং শেরপা।

তবে এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে হিমালয়ের অন্যান্য ৮ হাজার মিটার উচ্চতার শৃঙ্গেও ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে এয়ারলিফট টেকনোলজির। তাদের দাবি, এই উচ্চতায় আবর্জনা পরিবহনের ক্ষেত্রে তারাই এখন বিশ্বে একমাত্র সক্রিয় প্রতিষ্ঠান।

এভারেস্টে ড্রোনের এই প্রয়োগ শুধু প্রযুক্তির সাফল্য নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের পরিচ্ছন্ন পর্বতারোহণের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে।

RELATED NEWS

Latest News