ছাত্র অধিকার আন্দোলনকারী সংগঠন ‘অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট’ (এডিএসএম)-এর অবরোধের কারণে প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বুধবার রাতে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়েছে।
ছাত্র সংগঠনটি পুলিশের তিন কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেয়। অপসারণ চাওয়া কর্মকর্তারা হলেন—চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্ত, পটিয়া থানার ওসি জায়েদ নূর এবং ওসির দ্বিতীয় কর্মকর্তা আসাদ।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে পটিয়া থানার সামনে ‘জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের এক বছর’ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসময় শিক্ষার্থীরা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের একটি নিষিদ্ধ অংশের নেতা দীপঙ্করকে গ্রেপ্তারের দাবি জানালে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরই তারা থানার সামনে অবস্থান নেয় এবং বিক্ষোভ শুরু করে।
এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে সংঘর্ষ বাধে, যাতে ২৩ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম তৌকির (২১) ও সাইফুল ইসলাম (১৭) কে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
অন্যদিকে, পটিয়া থানার ওসি আবু জাহেদ মো. নজমুন নূর বলেন, শিক্ষার্থীরা থানায় একজন নিষিদ্ধ নেতাকে নিয়ে আসেন এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হলে ৩ থেকে ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে ও তিন পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণের দাবি তোলে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করে।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে দাঁড়ায়।
চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ছাত্র সংগঠন এনসিপির চট্টগ্রাম মহানগর সমন্বয়ক রিয়াদ বলেন, “পুলিশ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে, অথচ নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
ঘটনার পরবর্তী পর্যবেক্ষণে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পরিস্থিতি যেন পুনরায় উত্তপ্ত না হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।