যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে একটি ছোট বিমান দুর্ঘটনায় জেমস “জিম” ওয়েলার, তার স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধূসহ মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন। রোববার সকাল ৬টা ৫৩ মিনিটে ইয়াংসটাউন-ওয়ারেন আঞ্চলিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার মাত্র সাত মিনিট পরেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানায়, ওয়েলার পরিবার ছুটি কাটাতে মন্টানার বোজম্যান শহরে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার সময় বিমানে ছিলেন জেমস ওয়েলার (৬৭), তার স্ত্রী ভেরোনিকা (৬৮), ছেলে জন ওয়েলার (৩৬) এবং পুত্রবধূ মারিয়া (৩৪)। এছাড়াও পাইলট জোসেফ ম্যাক্সিন (৬৩) এবং সহ-পাইলট টিমোথি ব্লেক (৫৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা
উড্ডয়নের মাত্র দুই মাইল দূরে একটি গহীন বনের মধ্যে একটি বাসার পেছনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসকে হিমশিম খেতে হয়।
ফায়ার চিফ রেমন্ড পেস এটিকে এলাকার সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “ঘনবসতিপূর্ণ বনভূমিতে পড়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ জটিল হয়ে পড়ে।”
জেমস ওয়েলার কে ছিলেন?
ওহাইওর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পরিচিত নাম ছিল ওয়েলার পরিবার। শুধু ব্যবসায়ী হিসেবেই নয়, রেসিং দুনিয়ার সাথেও তাদের গভীর সংযোগ ছিল।
লিবার্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন জেমসের বাবা। জেমস নিজে ছিলেন বিগ ব্লক মোডিফায়েড রেসিং ডিভিশনে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন এবং ৩৬টি জয়ী রেসের মালিক।
শ্যারন স্পিডওয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা গভীর শোকাহত। ওয়েলার সিনিয়র ২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্পিডওয়ের সহ-মালিক ছিলেন।”
তদন্ত চলছে
মার্কিন জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (NTSB) এবং ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ মাইক হিলম্যান বলেন, “ওরা ছিল সেরা। সময়কে পেছনে নিয়ে যেতে পারলে তাদের সঙ্গে প্রাতঃরাশে যেতাম।”
স্থানীয়দের শোক
স্থানীয় কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্মৃতিচারণ করছেন এবং ওয়েলার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উদ্যোগ নিচ্ছেন।
বন্ধুরা বলছেন, ওয়েলারেরা ছিলেন সদালাপী ও উদার মানুষ। ব্যবসায়িক সাফল্যের পরও কখনো অহংকার করেননি।
এই বিমান দুর্ঘটনা শুধু একটি পরিবারের জীবন কেড়ে নেয়নি, ওহাইওর একটি প্রাণবন্ত অংশকেও স্তব্ধ করে দিয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনিশ্চিত থাকলেও পরিবারটির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশে একজোট হয়েছে পুরো এলাকা।