বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষে মোট রেমিট্যান্স প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ৩০.৩২ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
শুধু জুন মাসেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২.৮১ বিলিয়ন ডলার, যা পুরো বছরের রেকর্ড প্রবাহের এক শক্তিশালী সমাপ্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে, ২০২০–২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবারের প্রবাহ সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
এ প্রবৃদ্ধির পেছনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত আগস্টে নতুন সরকারের আগমনের পর দেশে অর্থনৈতিক আস্থার পরিবেশ তৈরি হয়। এর ফলে প্রবাসীরা আরও বেশি পরিমাণ অর্থ আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠাতে উৎসাহিত হয়েছেন।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির আরও কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মার্কেটের রেটের ব্যবধান কমে আসা এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর প্রবাসীদের মধ্যে দেশের প্রতি নতুন করে দেশপ্রেম জাগরণ।
বর্তমানে ব্যাংকগুলো প্রতি মার্কিন ডলারে প্রায় ১২২.৫০ টাকা দিচ্ছে, যা সরকার ঘোষিত ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা যুক্ত করে প্রায় ১২৫ টাকায় উন্নীত হচ্ছে।
এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, “ব্যাংক রেট ও কার্ব মার্কেটের ব্যবধান কমে আসায় অনেক প্রবাসী এখন আর হুন্ডি চ্যানেল ব্যবহার করছেন না।”
এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকেও শক্তিশালী করেছে, যা বৈদেশিক অর্থনৈতিক চাপে একটি রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখতে প্রণোদনা, সচেতনতা এবং কার্যকর নজরদারি ব্যবস্থা চালু রাখা জরুরি। দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিবেশ যত সহজ হবে, দেশের অর্থনীতি তত শক্তিশালী হবে।