ঢাকা: সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিয়ে চলমান আলোচনা কার্যকর অগ্রগতি পাচ্ছে না বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর অবস্থানের কারণে— এমন মন্তব্য করেছেন ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
রোববার পররাষ্ট্র পরিষেবা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের সপ্তম দিনের আলোচনার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সংলাপে মৌলিক সংস্কার বিষয়ক আলোচনাটি একটি দর-কষাকষির জায়গায় পরিণত হয়েছে। তার ভাষায়, “বিএনপি যদি কোনো সমঝোতা করে, সেটি দলীয় স্বার্থ বিসর্জন হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু আমরা যদি সমঝোতা করি, সেটিকে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।”
আখতার হোসেন বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করতে মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। এই সংস্কার বাস্তবায়নে আমাদের দল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সংবিধানিক ও সংবিধান-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি নিয়োগ কমিটি গঠনের বিষয়েও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বিএনপি ও কিছু দলের আপত্তির কারণে এ নিয়োগ কমিটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।”
তিনি আরও জানান, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল উচ্চকক্ষ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার পক্ষে থাকলেও রোববারের আলোচনায় এ প্রস্তাবও প্রতিরোধের মুখে পড়ে।
সংলাপে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো না গেলে দেশজুড়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে কি না— এমন প্রশ্নে আখতার বলেন, “বর্তমান সরকারের দায়িত্ব কেবল নির্বাচন আয়োজন নয়। তাদের উচিত, প্রথমে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা, জাতীয় সনদ ঘোষণা, বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি, নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ এবং মাঠপর্যায়ে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।”
তিনি বলেন, এসব মৌলিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে এনসিপি পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করবে।
আখতার হোসেন আরও বলেন, “শুধু মুখ বদলানোর জন্য নির্বাচন আয়োজন নয়, বরং ক্ষমতার গঠন কাঠামো পরিবর্তনই এখন সময়ের দাবি।”
জনগণের সঙ্গে মিলে অর্থবহ সংস্কারের বাস্তবায়ন পথ অনুসন্ধান করতে চান বলেও জানান তিনি।
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি সরকার এটি জারি করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমরা এবং জুলাই অভ্যুত্থানপন্থী সব দল মিলে আগামী ৩ আগস্ট তা সর্বজনসমক্ষে পাঠ করব।”