২০২৫ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুন আচরণবিধির খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রবিবার কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই খসড়ার বিষয়ে জনমত আহ্বান করা হয়েছে, যা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১০ জুলাই।
ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার উপসচিব দেওয়ান মো. সারোয়ার জাহান এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
নির্বাচনী আচরণবিধির খসড়াটি ১৯৭২ সালের “প্রতিনিধিত্ব আদেশ” অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়েছে এবং তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা ও পরিবেশবান্ধব প্রচারণা উপকরণ
নতুন আচরণবিধিতে নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার নিষিদ্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। কেউ এই বিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন।
তাছাড়া, প্রচারণায় পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং পোস্টারের বিকল্প হিসেবে বিলবোর্ড ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে কড়া বিধি ও শাস্তি
খসড়া আচরণবিধিতে সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা সম্পর্কেও বেশ কিছু বিধিনিষেধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত শাস্তি:
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ নির্বাচনের আগে কোনো বিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড, ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। পূর্বে এই জরিমানার সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৫০ হাজার টাকা।
কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বিধি লঙ্ঘন করলে তার ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ ১.৫ লাখ টাকা জরিমানা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি (বিধি ১৩(ক)(২)) ভঙ্গের ঘটনাগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের আওতায় বিচার হবে।
ব্যয়ের হিসাব ও সীমাবদ্ধতা
ধারা ২০ অনুযায়ী:
রাজনৈতিক দল, মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থী বা তাদের পক্ষে কর্মরত যে কেউকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণার খরচ (কনটেন্ট তৈরি, বিজ্ঞাপন, বুস্টিং, স্পনসরশিপ) নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে।
এই খরচ প্রার্থীর মোট নির্বাচনী ব্যয়ের অংশ হিসেবে গণ্য হবে।
সামাজিক মাধ্যমে বিদেশি অর্থায়নে প্রচারণা বা বিজ্ঞাপন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
মাইক্রোফোন ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা
ধারা ১৭ অনুযায়ী:
কোনো প্রার্থী একসাথে তিনটির বেশি মাইক্রোফোন বা লাউডস্পিকার ব্যবহার করতে পারবেন না।
প্রচারণায় ব্যবহৃত মাইক্রোফোনের শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলের বেশি হতে পারবে না।
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত এই খসড়া আচরণবিধি নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত করার আগে কমিশন জনগণের মতামত গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।