Sunday, June 29, 2025
Homeজাতীয়বাংলাদেশে শিক্ষাবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য ‘স্কিলফো’ প্রকল্পের সফলতা, জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ

বাংলাদেশে শিক্ষাবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য ‘স্কিলফো’ প্রকল্পের সফলতা, জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ

৭ হাজার কিশোর-কিশোরীকে দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষায় যুক্ত করার পর এবার ১৬টি জেলায় ১ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য প্রকল্প সম্প্রসারিত হচ্ছে

বাংলাদেশে শিক্ষাবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে ‘স্কিলফো’ (Skill-Focused Literacy for Out-of-School Adolescents) পাইলট প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই প্রকল্প কক্সবাজারে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে কার্যকর দক্ষতা এবং সাক্ষরতা নিশ্চিত করেছে।

এই সফলতার ভিত্তিতে, আগামীতে এটি দেশের ১৬টি জেলায় সম্প্রসারিত করা হবে। প্রকল্পের লক্ষ্য হলো ১ লাখেরও বেশি শিক্ষাবহির্ভূত ও এনইইটি (Not in Education, Employment, or Training) কিশোর-কিশোরীদের জন্য মৌলিক সাক্ষরতা, বাজারভিত্তিক দক্ষতা, ডিজিটাল ও আর্থিক জ্ঞান প্রদান করা।

ইউনিসেফ জানায়, যে এলাকাগুলোতে সম্প্রসারণ হচ্ছে, তা নির্বাচিত হয়েছে স্থানীয় যুব জনগোষ্ঠীর চাহিদা, চাকরির সুযোগ ও প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ভিত্তিতে।

কক্সবাজারে বাস্তবায়িত স্কিলফো পাইলট প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যসূচিতে ছিল কার্যকর সাক্ষরতা ও গণিত, কারিগরি দক্ষতা, ডিজিটাল ও আর্থিক শিক্ষা। সবকিছুই বাংলাদেশ জাতীয় যোগ্যতা কাঠামোর (BNQF) সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, “স্কিলফো মডেলটি ১৬টি জেলায় সম্প্রসারণের মাধ্যমে যদি আমরা এটি ৬৪ জেলায় বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে আমাদের দেশে শিক্ষার ধরণে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে এবং দক্ষতা নির্ভর শিক্ষা নেতৃত্বে আসবে।”

বিএনএফই ও ইউনিসেফের সহায়তায় স্কিলফো প্রকল্পটি গঠিত হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো প্রতিবছর শ্রমবাজারে প্রবেশকারী প্রায় ২২ লাখ যুবকের মধ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব দূর করা।

ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস বলেন, “স্কিলফোর সফলতা প্রমাণ করে যে, সঠিক প্রশিক্ষণ ও সহায়তার মাধ্যমে শিক্ষাবহির্ভূত ও এনইইটি কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন সম্ভব। এটি সরকারের শিক্ষা ও যুব উন্নয়ন উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করবে।”

স্কিলফোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর নমনীয় পাঠদান পদ্ধতি, বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য, উচ্চ হারে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ (৮৩.১%) এবং বিদ্যমান সরকারি অবকাঠামোর ব্যবহার।

সরকার এই মডেলকে মূলধারার বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতির অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, যাতে ২১ শতকের জন্য উপযুক্ত দক্ষতা নিশ্চিত করা যায় এবং শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করা যায়।

স্কিলফো এখন শুধু একটি প্রকল্প নয়, বরং এটি বাংলাদেশে দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার একটি জাতীয় মডেল হয়ে উঠছে।

RELATED NEWS

Latest News