বাংলাদেশ ব্যাংক ১২টি আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংকে ৫২,৫০০ কোটি টাকা নতুন টাকা ছাপিয়ে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। শনিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কঠোর মুদ্রানীতি থাকা সত্ত্বেও এই ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল রাখতে।
এই বিপুল অঙ্কের অর্থের মধ্যে ১০টি ব্যাংককে গ্রাহকদের আমানত পরিশোধে সহায়তা করতে ৩৩,০০০ কোটি টাকা ‘ডিমান্ড লোন’ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৯টি ব্যাংকের চলতি হিসাব ঘাটতির ১৯,০০০ কোটি টাকাও ডিমান্ড লোনে রূপান্তর করা হয়েছে।
সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), বেসিক ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক।
এর মধ্যে এককভাবে সবচেয়ে বেশি অর্থ পেয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, যার পরিমাণ ১৪,২০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, “নির্বাচনের পূর্বে পাঁচটি প্রাইভেট ইসলামি ব্যাংকের একীকরণ খুব শিগগিরই শুরু হচ্ছে।” তিনি বলেন, “এই প্রক্রিয়া চলমান এবং আগামী সরকারও এটি অব্যাহত রাখবে বলে আমরা আশা করছি।”
তিনি আরও জানান, “দুর্বল ও অনিয়মগ্রস্ত ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই একীভূত করা হবে। এদের প্রাথমিকভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। পরবর্তীতে পুনর্গঠনের মাধ্যমে এসব ব্যাংকের শেয়ার পাবলিক ও আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিনের দুর্বলতা ও অনিয়ম দূর করতে সহায়ক হতে পারে, তবে অতিরিক্ত টাকা ছাপানো মূল্যস্ফীতির আশঙ্কাও তৈরি করছে।