জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের চলমান কর্মবিরতির কারণে দেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এনবিআরের পূর্ণ কর্মবিরতির কারণে বিগত কয়েক দিন ধরে দেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এই স্থবিরতা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য একটি অশনি সংকেত বলেও মন্তব্য করেন তারা।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চেম্বারের (আইসিসি) বাংলাদেশ সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, “সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট সংলাপ ও সহযোগিতা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।” তিনি বলেন, “অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের উচিত দ্রুত আন্দোলনরত এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা।”
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) লিখিত বিবৃতিতে বলেন, “চলমান পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এখন শীতকালীন রপ্তানির চূড়ান্ত মৌসুম চলছে। তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যাল, কৃষিপণ্য ও প্লাস্টিক শিল্পগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে অর্থনীতির ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বচ্ছ আলোচনার মাধ্যমে বিতর্কিত অধ্যাদেশটি পর্যালোচনা করা হয়। এতে আন্তর্জাতিক মান ও দেশের বাস্তবতা—দুই দিকই যেন প্রতিফলিত হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এনবিআর কর্মকর্তাদের এই আন্দোলন চলতে থাকলে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, আমদানি ফরমালিটি এবং রপ্তানি প্রক্রিয়া সবই দীর্ঘস্থায়ীভাবে ভেঙে পড়তে পারে। এর প্রভাব পড়বে বৈদেশিক বাণিজ্য, রাজস্ব আহরণ ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর।