ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় এক নারী আইন শিক্ষার্থীকে কলেজ ক্যাম্পাসেই গণধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন বর্তমান ও একজন প্রাক্তন ছাত্র বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
বুধবার সন্ধ্যায় কলেজ চত্বরে একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস (এআইটিসি) জানিয়েছে, “আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে।” তবে বিরোধী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নারী সুরক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে।
বিজেপির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গ নারীর প্রতি সহিংসতার প্রজননভূমিতে পরিণত হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন তার কন্যাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।”
তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটল, যখন কলকাতা শহর এখনো ২০২৪ সালের আগস্টে এক সরকারি হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ওই ঘটনার পর জানুয়ারিতে দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
চিকিৎসকের নির্মম হত্যাকাণ্ড সেসময় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ এবং মোমবাতি মিছিলের জন্ম দেয়। অনেকেই এই হামলার নৃশংসতাকে ২০১২ সালের দিল্লির ‘নির্ভয়া’ কাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন, যা তখন পুরো ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
ভারতে ধর্ষণজনিত সহিংসতা এখনো একটি জটিল সামাজিক সংকট হিসেবে রয়ে গেছে। ২০২২ সালে দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৯০টি ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে বলে সরকারি তথ্য জানায়।
মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের নেতারা বলছেন, আইন ও নীতিমালার পাশাপাশি সমাজে মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।